সংবাদ শিরোনাম :
রংপুরে ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন। রংপুরে বাসা থেকে আইনজীবীর মরদেহ উদ্ধার আন্দোলনের মুখে ওএসডি রমেক অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজ, আন্দোলন প্রত্যাহার ‘আগে ডিসিই হতেই পারি নাই, এখন ডিসিদের চালাবো। সাহস করে দায়িত্ব নিয়েছি’ নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী আলুবীজ পাচ্ছেন না রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা বেরোবির পাঠ্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে জুলাই গনঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বেরোবিতে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ উপাচার্য আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৭ জনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ রংপুরে টিকটক করার সময় ট্রেনে ধাক্কা খাওয়া যুবক অলৌকিকভাবে বেঁচে আছেন।। নীলফামারীতে ট্রাকের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু
নারিন ঝড় ম্লান করে দিলেন হাসান আলি

নারিন ঝড় ম্লান করে দিলেন হাসান আলি

ফাইল ছবি

আগেরদিনই জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছিলেন, মোহাম্মদ আমিরকে নিয়ে পড়েছেন তিনি মধুর সমস্যায়। যদি আমিরকে সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে একজন ব্যাটসম্যান কমাতে হবে তাকে। কিন্তু কাকে বাদ দেবেন? ব্যাটসম্যানরা যে সবাই ফর্মে! তারওপর বিদেশি কোটার বিষয় আছে। কাকে বাদ দিয়ে আমিরকে নেবেন তিনি?

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান যখন টস করতে নামছিলেন, তখনও জানা গেল না কী সিদ্ধান্তটাই না নিচ্ছে ঢাকা! গত তিন ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচেই দলের সেরা পারফরমার শহিদ আফ্রিদিকে বসিয়ে রাখা হলো। নেয়া হলো মোহাম্মদ আমিরকে। আফ্রিদি ব্যাট এবং বল হাতে সমান পারফরমার। এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে যেমন ঝড় তুলছেন, তেমনি বল হাতে তো রীতিমত বিধ্বংসীরূপ ধারণ করছেন তিনি। ৩ ম্যাচে ৯ উইকেট শিকারই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।

আফ্রিদিকে বসিয়ে রেখে ঢাকা কি ভুল করলো? জবাব পেতে হয়তো খুব বেশি দেরি করতে হয়নি। পাকিস্তানি এই ড্যাশিং ওপেনারের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে নামানো সুনিল নারিন না হয় তার অভাবটা পূরণ করেছেন। ঝড় তুলেছেন ব্যাটে। ৪৫ বল খেলে ৭ বাউন্ডারি আর ৫ ছক্কায় করেছেন ৭৬ রান। এছাড়া কুমার সাঙ্গাকারা করেছেন ২৮ রান। বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউই আর দুই অংকের ঘরও ছুঁতে পারেননি।

যেখানে আনকোরা ব্যাটসম্যান সুনিল নারিন উত্তাল ব্যাটিং করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলার এবং ফিল্ডারদের দিশেহারা করে দিয়েছিলেন, সেখানে কেন মাত্র ১২৮ রানেই অলআউট ঢাকা ডায়নামাইটস? যে দলটি এই টুর্নামেন্টেই এখনও পর্যন্ত দু’বার ২০০ প্লাস স্কোরের জন্ম দিয়েছে, তারা কিভাবে ১৮.৩ ওভারে ১২৮ রানে অলআউট হয়?

ভাগ্যিস সুনিল নারিন দাঁড়াতে পেরেছিলেন। না হলে যে ঢাকাকেই সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় অধোবদন হতে হতো! সেই লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন কেবল নারিনই। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচে নারিনের ইনিংস ওপেন করার অভিজ্ঞতা আছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মার-মার কাট-কাট ব্যাটিংই দরকার। যে কয়বল টিকে থাকা যায়, মারতে হবে। স্ট্রাইক রেট যত পারা যায় বাড়িয়ে ব্যাটিং করতে হবে। নারিন সেটা পারেন। কেকেআরেও সেটা প্রমাণ করেছেন। বিপিএলে ঢাকার হয়ে এই প্রথম ইনিংস ওপেন করতে নেমেও পারলেন। তার নিজের কাজটা তিনি করে দিয়ে গেছেন। ৪৫ বলে ৭৬ রান চাট্টিখানি কথা নয়!

কিন্তু নারিনের এই উত্তাল উইলোবাজি যে পুরোপুরিই ম্লান হয়ে গেলো এক তরুণ পাকিস্তানি পেসারের হাতে! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই এই পেসার বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আগামীর ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করবেন তিনি। করছেনও। মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের বোলিং ব্যাটারিতে কতটা ভয়ঙ্কর শক্তির রূপ দিয়েছেন হাসান আলি, তা কেবল তাদের প্রতিপক্ষ হওয়া দলগুলোই বুঝতে পারছে। যেমনটা বুঝতে পেরেছিল ভারত, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে।

আজ বুঝতে পারলো ঢাকা ডায়নামাইটস। যদিও এই ম্যাচে আমির আর হাসান আলি পরস্পর প্রতিপক্ষ। কিন্তু হাসান আলি যে সত্যি সত্যি বর্তমান সময়ে পেস জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, সেটা যে কোনো উইকেট কিংবা পরিবেশেই হোক না কেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শেষ করে আসার পর আরও একটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ওই ম্যাচে ছিলেন পুরোপুরি খরুচে বোলার। ৩৯ রানে দিয়েছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন ১ উইকেট।

এরই মধ্যে ঢাকায় পার করে ফেলেছেন নিজের চতুর্থতম দিন। এর মাঝেই ঢাকার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে ফেলেছেন নিজেকে। উইকেটটাও বেশ পড়া হয়ে গেছে। যে কারণে আজ যখন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যান সুনিল নারিন ব্যাট হাতে ঝড় তুলছিলেন, তখন বল হাতে আরও বিধ্বংসীরূপে আবির্ভূত হয়ে গেলেন হাসান আলি।

কতটা বিধ্বংসী? তা তার বোলিং ফিগার দেখলেই বোঝা যাবে। ৩.৩-০-২০-৫। টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে বিধ্বংসীরূপ আর কে কবে দেখেছে? পরিসংখ্যান ঘাটলে হয়তো আর দু’একটি পাওয়া যাবে। তাও পুরো টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে। হাসান আলির এই ঝড়েই উড়ে গেল ঢাকার শক্তিশালি ব্যাটিং লাইনআপ। সুনিল নারিনের ঝড় তখনই ম্লান হয়ে গেলো, হাসান আলির সামনে।

২০ রান দিয়ে একা একজন ৫ উইকেট নেয়ার পর অন্যদের আর কিছু করার থাকে না। সঙ্গে যোগ হয়েছিলেন সাইফউদ্দিন আর ঢাকার দুর্ভাগ্য। সাইফউদ্দিন ফিরিয়েছিলেন ভয়ঙ্কর নারিনকে। আর দুর্ভাগ্য হলো, দুটি রান আউট। ২৮ রান করা সাঙ্গাকারা হয়েছেন রানআউট। গত তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই বিধ্বংসী ব্যাটিং করা কাইরন পোলার্ডও হয়েছেন রানআউট। ঢাকার আকার্শে দুর্ভাগ্য ভর তো করেছিল তখনই। ১২৮ রানে অলআউট হওয়ার মধ্য দিয়ে যার ষোলকলা পূর্ণ হলো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved © batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com