সংবাদ শিরোনাম :
আফগানিস্তানের বিজ্ঞাপনে ইধিকা নিরব সেনাবাহিনী কর্তৃক রংপুরে এনসিপি এবং বিএনপি নেতাকর্মীদদের জেরা প্রসঙ্গে সার্জিস আলমের কড়া হুশিয়ারি!!! তারাগঞ্জে ৮১ বোতল ফেন্সিডিলসহ মোটরসাইকেল উদ্ধার:মাদক ব্যবসায়ী উধাও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য রবির রক্তদান কর্মসূচি পীরগঞ্জে কন্দাল ফসলের ৩ দিনব্যাপী কৃষি মেলার  উদ্বোধন আজ রংপুরে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হারাগাছে অনলাইন ক্যাসিনো সহ সকল জুয়া বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন জামায়াতে ইসলামীর আমির: ‘আমরা ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই’ আওয়ামীলীগ একটি ভন্ড প্রতারক সন্ত্রাসী দুর্নীতিবাজ দল:অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু রংপুরে শিবিরের হেল্প ডেক্স হামলা বিক্ষোভ আটক- ২

এটিএম আজহারুল ইসলামের রায় ঘোষণার পর গ্রামের বাড়ি বদরগঞ্জে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রংপুর।।বাতায়ন২৪ডটকম

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ঢাকায় রায় ঘোষণার পর আজহারুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে শুকরিয়া আদায়ে দোয়ার আয়োজন করেছে উপজেলা জামায়াতে ইসলাম।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদন্ডাদেশ থেকে খালাস দেন।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা,অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।

‎২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজার থেকে আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।সে সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

‎২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান আজহারুল ইসলাম।এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

‎ আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট আবেদন করেছিলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার এ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

‎ওই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৬ ফেব্রয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর তিনি আপিল করেন।অন্য দিকে বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির কামরুজ্জামান জানান তারা শোকরানা দোয়ার আয়োজন করেন। তিনি বলেন, রায়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এই বিষয়ে আমাদের মিষ্টি বিতরণের কিছু নেই। তবে মনের মধ্যে আনন্দ আছে। এজন্য আমরা আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। সেই সাথে বদরগঞ্জ উপজেলার ১২ নম্বর রেল গুমটি সংলগ্ন জামায়াতে ইসলামের পার্টি অফিসে বাদ আছর দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে পূর্বঘোষিত তারিখ হওয়ায় সকাল থেকেই টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমের সামনে বসেছিল এটিএম আজহারুল ইসলামের কর্মী সমর্থক ও বদরগঞ্জবাসী। এরপরেই রায় ঘোষণার পরপরেই এটিএম আজহারুল ইসলামের জন্মভিটা বদরগঞ্জবাসীর উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মেনহাজুল ইসলাম বলেন, একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে ফ্যাসিস্ট সরকার এতদিন জেলে বন্দি করে রেখেছিল। সত্যকে কখনও দাবায় কেউ রাখতে পারেনি। আজকের রায় সেটাই প্রমাণ করেছে।দেশবাসীর মতো আমরা বদরগঞ্জবাসীও আজকের এই রায়ে ভীষণ খুশি।

এটিএম আজহারুল ইসলামের বড় ভাই এটিএম আব্দুল আউয়াল বলেন, দীর্ঘদিন পর আমার ছোট ভাই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আমরা তাকে আমাদের কোলে ফিরে পাব, নিজ জন্ম ভিটায় ফিরে পাব। এটা আমাদের জন্য আনন্দের খবর। এজন্য আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।

‎প্রসঙ্গত, এটিএম আজহারুল ইসলাম রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের বাতাসন ডাক্তার পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি।গ্রেপ্তারের আগে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন।

‎ তিনি ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এবারেও তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।

বাতায়ন২৪ডটকম/রিয়াদ ইসলাম 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved © batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com