স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও বাজেট ব্যয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়–
মজুরি প্রবৃদ্ধি : বিগত কয়েক বছরে মূল্যস্ফীতি ও মজুরি প্রবৃদ্ধির হারের মধ্যে পার্থক্য ছিল অনেক বেশি। যার ফলে দেশের মানুষের প্রকৃত আয় কমে আসছিল। তবে চলতি অর্থবছরের সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি ও মজুরি প্রবৃদ্ধির হারের মধ্যে পার্থক্য অনেকটাই কমে এসেছে। সর্বশেষ নভেম্বর ২০২৫-এ মূল্যস্ফীতি ও মজুরি প্রবৃদ্ধি (পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট) যথাক্রমে ৮.২৯ ও ৮.০৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড়েছিল ৯.০২ ও ৭.০৪ শতাংশ। ফলে বিগত বছরগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে প্রকৃত আয়ের পরিমাণ অনেক কমলেও বর্তমান অর্থবছরে এ অবস্থা থেকে ক্রমান্বয়ে উত্তরণ সাধিত হবে।
দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন চলকের ভারসাম্যহীনতা ইতোমধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে চলে এসেছে।
আর্থিক ও বৈদেশিক খাত : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত গ্রস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২.৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগস্ট ২০২৪-এ ছিল মাত্র ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়ে আসা, প্রবাস আয়ের গতি বৃদ্ধি এবং দেশের আর্থিক খাতে সম্প্রতি সুদের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগামীতে ক্রমান্বয়ে আরও বৃদ্ধি পাবে।
চলতি হিসাব : বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চলতি হিসাব ঋণাত্মক ছিল এবং ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে -১৮.৭, -১১.৬, ও -৬.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে আর্থিক খাতে সুব্যবস্থাপনা ও অর্থ পাচার রোধের ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে এটি হয়েছে মাত্র -১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে এটি হয়েছে -৭৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রবাসী আয় : চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৫ লাখ কর্মীর বৈদেশিক নিয়োগ নিশ্চিত হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার এবং একই সময়ে ১৩.০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় হয়েছে, যা বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.১৪ শতাংশ বেশি।
আমদানি : দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও উৎপাদনশীল করতে আমদানির ক্ষেত্রে আরোপিত বিধিনিষেধ অপসারণ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে আমদানি প্রবৃদ্ধির হার ছিল -১.২ শতাংশ (ঋণাত্মক), যা বর্তমান অর্থবছরের (২০২৫-২৬) একই সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬.১ শতাংশ।
ঋণপত্র : মূলধনী যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর ২০২৪ সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল -৩২.৮ শতাংশ (ঋণাত্মক), যা বর্তমান অর্থবছরের একই সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৭.৭ শতাংশ। এ ছাড়া শিল্পজাত কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর ২০২৪ সময়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০.১ শতাংশ, যা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের একই সময়ে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০.৯৮ শতাংশে। আর্থিক অব্যবস্থাপনার ফলে দেশের ইমেজের নিম্নগতি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে, যার উদাহরণ ঋণপত্র খোলার হার এবং ট্রেড ফিনান্সিং সহজতর হওয়া।
বাতায়ন২৪ডটকম।। মেমোহি।।