স্টাফ করসপন্ডেন্ট।।বাতায়ন২৪ডটকম।।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনের (৪৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে ঘটনাটি ঘটেছে। কারা সূত্র জানায়, কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি সাধারণ কক্ষে তিনজন বন্দী ছিলেন। ঘটনার সময় একজন আদালতে, আরেকজন ঘুমিয়ে ছিলেন।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে তিনি নাশতা করেছেন। এরপরই কক্ষে ফাঁস দেন।’ কীভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, সাইদুর রহমানকে উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কারা সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় আলোচিত ছিলেন সাইদুর রহমান। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলাসহ অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অনেক নেতা–কর্মীর মতো সাইদুর রহমানও আত্মগোপনে চলে যান। গত জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এর পর থেকে কারাগারে ছিলেন সাইদুর রহমান।
সাইদুর রহমান আত্মহত্যা করেছেন, কারা কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্য মানছে না তাঁর পরিবার। সাইদুরের স্ত্রী রোকসানা রহমান বলেন, ‘কে বলছে? আরে ভাই না। সকাল বিলা (বেলা) ওনার ওইখান থিকা একজন লোক কোর্টে আইছে, সে দেইখা আসছে তিনি সুস্থ। যখন যে কোর্টে আসত, তার কাছ থিকা খবর নিতাম। সে বলছে, ভালা ভাইরে সকালে রাইখা আসছি।’
কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় সাইদুরের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি বলেও অভিযোগ করেন রোকসানা রহমান। তিনি বলেন, ‘তাঁর হার্টে দুইটা রিং পরানোর কথা ছিল। কিন্তু ধইরা ফালাইলো (গ্রেপ্তার করল)। তারপর হাসপাতালে নিবার চাইলাম, অনুমতি পাইলাম না। থানায় রিমান্ডে আনছিল, তখন ব্যথা উঠছিল। পরে ব্যথা কইমা যাওয়ায় পুলিশ বলছিল, ব্যথা যেহেতু কইমা গেছে, হাসপাতালে নেওয়া লাগব না। এরপরও এনাম থিকা (এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) একটুখানি পরীক্ষা কইরা নিতে চাইছিলাম, পরে তারা কইল, না করা লাগব না, উনি তো সুস্থই আছে।’
সাইদুরের স্ত্রী বলেন, ‘আমি হার্টের ওষুধ কিনা দিলাম। এরপর আরেকবার থানায় আনছে, তখনো ভালোই আছিল। খালি কান্নাকাটি করছে, খালি কইছে আমারে বাইর করো (জেলখানা থেকে), আমার দুম (দম) বন্ধ হইয়া আহে। আমি আটকা জায়গায় থাকা পারি না। আমি তারে বলছিলাম, জামিন তো দেয় না এখন। খালি কান্নাকাটি করছে।’
বাতায়ন২৪ডটকম/শরিফুল ইসলাম