স্পেশাল করেসপনডেন্ট,রংপুর।। বাতায়ন২৪ ডটকম।।
তিস্তা নদীর তীরে চীনা ফ্রেন্ডশিপ এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে তিস্তা উন্নয়ন ফোরাম নামের একটি সংগঠন। ১০ কিলোমিটারব্যাপি ওই মানববন্ধনেন যোগ দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কেন এই হাসপাতাল সেখানে চান এজন্য নানান যুক্তি তুলে ধরেছেন তারা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনটি রংপুর মহানগরীর বুড়িরহাট থেকে মহিপুর তিস্তা সড়ক সেতুব হয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের কাকিনা হাট পর্যন্ত তুই পারে ১০ কিলোমিটার ব্যাপি হয়। শিশু, কিশোর শিক্ষার্থীরাও প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে অংশ নেয়। নদীপাড়ের মানুষ ছাড়াও সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও সাংবাদিক সংগঠন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ কারী গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক আব্দুল আলীম প্রামানিক বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের
স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মহিপুরে হলে সবাই সুবিধা পাবে। কারন এটা মধ্যবর্তি এলাকা। সব দিক থেকে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণকারী গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় উচ্চতর পরিষদ সদস্য হানিফ খান সজিব বলেন, ” ভারত যখন চিকিৎসা ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে, তখন আমাদের দেশে নিজস্বভাবে বিশ্বমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। চীন যে উদ্যোগটি নিয়েছে এটি গুরুত্বপূর্ণ। মহিপুরে হাসপাতালকে নির্মাণ করা হলে এই অঞ্চলের অনেক মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হবে। কারণ রংপুর হচ্ছে এই বিভাগের হেডকোয়ার্টার। এখানেই সবাই আসেন সবকিছু করতে। অন্য জায়গায় এই হাসপাতালটি করা হলে। তারা শুধু স্বাস্থ্য সেবা পাবেন। অন্যান্য সেবার জন্য আবার রংপুরে আসতে হবে। আর যেহেতু চীন নদীপারে করতে চায়। সে হিসেবে মহিপুর হচ্ছে সবথেকে ভালো এলাকা। এখানে ২৯ একর সরকারি খাস সম্পত্তিও আছে। ”
সংহতি জানিয়ে কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর গঙ্গাচড়া উপজেলার আমির মাওলানা নায়েবুজ্জামান। তিনি বলেন, ” যেহেতু তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করতে চাই চীন। আর তিস্তা তীরেই এই হাসপাতালটিও নির্মাণ করতে চাই চীন। সে কারণেই সেটি যদি মহিপুরে হয়। তাহলে ৮ জেলার এটি কেন্দ্র হবে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যদি গুরুত্বপূর্ণ কোন ইতি কাল রবি আসে সেক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে এই হাসপাতালের সাথে এক্সচেঞ্জ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এটি যদি দূরে নেয়া হয় তাহলে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ। আর যেহেতু এখানে সরকারের খাস জমি আছে। দ্রুতগতিতে এই সাইড সিলেকশনের দাবি জানাই।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ সরকার। তিনি বলেন, ” দল-মত নির্বিশেষে আমরা এই প্রকল্পটি মহিপুরে বাস্তবায়ন চাই। এটাই এখন আমাদের দাবি। এখানে প্রকল্পটি হলে সবাই উপকৃত হবে। এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি ও ত্বরান্বিত হবে। ”
তিস্তা উন্নয়ন ফোরামের সংগঠক লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার চরাঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপন এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এখানকার স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে।প্রস্তাবিত স্থানটি গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের মহিপুর তিস্তা সেতু সংলগ্ন চর কলাগাছি এলাকা। এখানে প্রায় ২৯ একর খালি জমি রয়েছে, যা হাসপাতালের মূল ভবন, হেলিপ্যাড, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আবাসন ও গবেষণাগার নির্মাণের জন্য উপযুক্ত। সবুজঘেরা শান্ত পরিবেশ ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নে সহায়ক হবে “।
বাতায়ন২৪ডটকম / রিয়াদ ইসলাম