সংবাদ শিরোনাম :
রংপুরে বালুভর্তি ট্রাক থেকে বিপুল পরিমান গাজা উদ্ধার, গ্রেফতার ২ আওয়ামীলীগ যে পথে বিএনপি সেই পথে, আমরা ভাই মরলো কেন তারেক রহমান জবাবদে শ্লোগান জুমার নামাজ পড়তে যাওয়ার পথে যুবদল নেতাকে গুলি ও রগ কেটে হত্যা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, রংপুর বার ইউনিটের ১৮ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন আগামী ১৬ জুলাই কি সরকারি ছুটি? আশ্রয় কেন্দ্রে বানভাসিদের ত্রানের জন্য হাহাকার পেটে ৭ ইঞ্চি কাঁচি রেখে সেলাই, ৭ মাস পর অপসারণ দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে এবারও শীর্ষে রংপুর মহানগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রংপুর বিভাগে ১৩ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাশ  করেনি রংপুর বিভাগে ১৩ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি, ৪৮টিতে শতভাগ পাস
আশ্রয় কেন্দ্রে বানভাসিদের ত্রানের জন্য হাহাকার

আশ্রয় কেন্দ্রে বানভাসিদের ত্রানের জন্য হাহাকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফেনী।। বাতায়ন২৪ডটকম।।

ফেনীতে টানা বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে মাইলের পর মাইল প্লাবিত হয়েছে।গতকাল দুপুর পর্যন্ত ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তবে সরকারি হিসেবে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ২০ হাজার বলে দাবি করেছেন জেলা প্রশাসন।

আশ্রয় কেন্দ্রে বানভাসি মানুষের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। বেশির ভাগ আশ্রয় কেন্দ্রে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে বন্যাদুর্গতরা।  বানভাসীদের ত্রানের জন্য হাহাকার হয়ে পড়েছে।

এদিকে বুধবার রাত থেকে মুহুরী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় মুহুরী নদীর পানি ১০ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর নতুন করে বেড়িবাঁধের আর কোথাও না ভাঙলেও ইতিপূর্বে ভাঙনকৃত ২০টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এতে করে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। তৃতীয় দিনের মতো ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক ডুবে থাকায় ছোট-বড় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ফেনী জেলা সদরের সঙ্গে ফুলগাজী ও পরশুরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

নতুন আক্রান্ত দুই উপজেলা, পানিবন্দি শতাধিক গ্রাম: বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ২০টি ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলাবাসী পানিবন্দি হলেও রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজী উপজেলার ৬৭ গ্রাম, পরশুরাম উপজেলার ২৭টি গ্রাম, ছাগলাইয়া উপজেলার ১২টি গ্রাম, সদর উপজেলার পাঁচটি গ্রাম রয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে দাবি করলেও আক্রান্ত গ্রামের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আক্রান্ত চার উপজেলার শতাধিকেরও বেশি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ফুলগাজীর দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ জসিম বলেন, বুধবার বিকাল থেকে তার ঘরে পানি ঢুকে কোমর পর্যন্ত পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তিনি তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসার আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।

একই এলাকার রোকসানা আক্তার বলেন, ঘরে পানিবন্দি থাকায় সন্তানদের নিয়ে নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসেন। তবে তার আশ্রয় কেন্দ্রটিতে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো খোঁজখবর নেয়নি। পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে শুকনো খাবার কিনে বাচ্চাদের খাওয়ানো হয়েছে।

বুধবার রাত থেকে নতুন করে প্লাবন দেখা দিয়েছে ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে। ছাগলনাইয়া উপজেলার এলনাপাথর, মাটিয়াগোধা, দক্ষিণ সতর নদীরকূল, দক্ষিণ সতর, উত্তর পানুয়া, কাশীপুর, নিচিন্তা, লক্ষ্মীপুরসহ বেশ কিছু স্থান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবল চাকমা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপজেলায় ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪৯০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বিভিন্ন গ্রাম থেকে আক্রান্তরা আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে আসছেন। উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক বন্যার চিত্র তদারকি করা হচ্ছে।

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর ও মোটবি ইউনিয়নের ইজ্জতপুর, বাঘাইয়া কচুয়া এলাকার কিছু গ্রাম পানিবন্দি হওয়ায় শতাধিক পরিবার নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা।

উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী: ফুলগাজীর পানিবন্দি বিভিন্ন গ্রামে উদ্ধার তৎপরতায় নেমেছে সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের দুরন্ত ১৫ সাপোর্ট ব্যাটালিয়ানের ১৩৯ সদস্যের একটি কোম্পানি উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার কাজে নেমেছেন। নিজস্ব ট্রাকে করে শুকনো খাবারের সহস্রাধিক প্যাকেট বিতরণ করার জন্য ফুলগাজীতে আনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর কোম্পানির দায়িত্বে থাকা মেজর মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান রাশেদ বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার কাজ শুরু করা হয়েছে। সেনাবাহিনী নিজস্ব ১০টি স্পিডবোটের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় পানিবন্দিদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করা প্রয়োজন হবে এবং ত্রাণ বিতরণের প্রয়োজন হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সেনাবাহিনী পানিবন্দিদের পাশে রয়েছে।

বাতায়ন ২৪ ডটকম/শরিফুল ইসলাম।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved © batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com