স্পেশাল করেসপনডেন্ট,রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা জুলুম করে প্রতিশোধ নিতে চাই না, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে আওয়ামী লীগের প্রতি প্রতিশোধ নিতে চাই। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে তাতে দেশের বৃহত অংশের মানুষের উন্নয়নের কথাবার্তা নেই। বিএনপি দেশ ও জনেগণের পক্ষের রাজনৈতিক দল। ক্ষমতায় গেলে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করবে।
বুধবার ( ২৩ এপ্রিল) রংপুর, নীলফামারী জেলা এবং সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনগুলোর প্রায় ২ হাজার পদস্থ নেতাকে নিয়ে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য বিএনপির ৩১ দফার প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে কেন্ত্রীয় কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটি।
পৃথক তিনটি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় বেলা সোয়া ৪ টায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হক বিএনপি চেয়ারপারস তারেক রহমান। প্রথমে নেতাদের প্রশ্ন শোনেন এবং উত্তর দেন ঘন্টাখানেক। পরে সন্ধায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন তিনি।
এসময় তারেক রহমান বলেন, তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ ষোল বছরে বিএনপি এবং গণতন্ত্রকামী দলগুলোর নেতাকর্মীরা গুম খুন, মিথ্যা, মামলাসহ বিভিন্নভাবে জুলুমের শিকার হয়েছেন। বিভিন্নভাবে পুলিশ বা স্বৈরাচারের লোকজন দ্বারা আপনারা অত্যাচার নির্যাতিত হয়েছেন । আপনি যদি মনে করেই থাকেন আপনি অত্যাচার নির্যাতিত হয়েছেন। আপনার উপর জুলুম হয়েছে। নির্যাতন হয়েছে। তাহলে আসুন আমরা জুলুম করে প্রতিশোধ নিতে চাই না ।তারা যা করেছে আমরা তা করতে চাই না। আমরা চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে চাই।
তারেক রহমান বলেন, ‘ আমাদের এই ৩১ দফাকে যদি বাস্তবায়ন করতে হয় আমরা যখন বাস্তবায়ন করতে পারব ওই যে আপনি নির্যাতিত হয়েছেন অত্যাচারিত হয়েছেন সেই অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিশোধ আমরা নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। ৩১ দফা দেশ ও জনগণের পক্ষে। ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমি আমার উপরে যে অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে, জেল জুলুম খেটেছি, আমার মায়ের উপরে যে অত্যাচার নির্যাতন জেল জুলুম হয়েছে আমার ভাইকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিশোধ আমি নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আপনার উপরে যে অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে আপনার পরিবার যে কষ্টের মধ্য দিয়ে গিয়েছে সকল কিছুর প্রতিশোধ নিতে চাই আমরা ৩১ দফার মাধ্যমে এটি হবে আমাদের প্রতিশোধ নেয়ার উপায়। এখান থেকে বের হয়ে ৩১ দফা দেশের প্রতিটি জনগণের দোড়গোড়ায় পৌছে দিতে হবে। দলের পক্ষে জনসমর্থনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। এই শপথ নিয়ে মাঠে কাজ করতে হবে। এজন্য তিনি সবার কাছে দুই হাত তুলে প্রতিশ্রুতি নেন। ‘
তারেক রহমান বলেন, ‘ আজকের আমাদের আলোচনার সিংহভাগ অংশ হচ্ছে মানুষের সমস্যা নিয়ে । মানুষের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে। কিন্তু আমরা যদি রিফর্ম বা সংস্কার নিয়ে সরকার বা অন্যদের বিভিন্ন কথাবার্তাগুলো শুনি। তারমধ্যে কিন্তু আপনাদের সিংহভাগ মানুষগুলো যা জানতে চেয়েছেন, বলতে চেয়েছেন তিা কিন্তু সেভাবে আসে না। এটা একটি ইন্টারেস্টিং বিষয়। আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন। ‘
তারেক রহমান বলেন, ‘ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, নেত্রী খালেদা জিয়া এই মানুষগুলো যখন দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছেন, দায়িত্ব পেয়েছেন। তখন তারা মুল যোগ দিয়েছেন গুরুত্ব দিয়েছেন, কিভোবে মানুষের শিক্ষা সমস্যার সমাধান করা যায়। কিভাবে স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান করা যায়। যাতায়াতের সমস্যার সমাধান করা যায়। নিরাপত্তার সমস্যার সমাধান করা যায়। কিভাবে কৃষির উৎপাদন বাড়ানো যায়। এইসব ব্যাপারে তারা জোড় দিয়েছেন। ’
তারেক রহমান বলেন, ‘ বিএনপির সময়, শহীদ জিয়ার সময় নারীদের আসর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এরকম অনেককাজ করা হয়েছে। আইন ব্যবস্থাকে স্বাধীন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি গৃরৃত্ব দেয়া হয়েছে কৃষিকে, কর্মসংস্থানকে, স্বাস্থ ব্যাবস্থাকে, এ ধরণের বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যে ব্যবস্থাগুলো প্রতিদিন মানুষের জীবনের সাথে সম্পর্কিত। ‘
তারেক রহমান বলেন, ‘ আমাদের রাজনীতির লক্ষ, উদ্দেশ্য হলো আমরা বলতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দলের। সেটা হলো এদেশ এবং এদেশের মানুষ। কিভাবে কোন কাজটি করলে একজন সাধারণ মানুষ, তিনি শিক্ষক হোন, আর কৃষক হোক অখবা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হোক, যে পেশারই হোক না কেন, আজ যেমন আছে। আগামীকাল যেন একটু বেটার থাকে। ভালো থাকে। তার ভবিষ্যতটা যেন একটু ভালো হয়। তার পরিবারের ভবিষ্যত, তার সন্তানের ভবিষ্যতটা যেন আরেকটু ভালো হয়। আমাদের রাজনীতির মূল বিষয় এটাই।’
দিনব্যাপি রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে কর্মশালায় উদ্বোধন করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু। কর্মশালায় আলোচনা করেন র্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা এ্যডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল, মিডিয়া সেলের আহবায়ত মওদুদ হোসেন আলমগীর, প্রফেসর মোর্শেদ খান, ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর উপস্থাপনায় কর্মশালায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর সদস্য সচিব মাহফুজ উন ডন প্রমুখ।
এছাড়াও নীলফামারীতে জেলা আহবায়ক আখম আলমগীর সরকার, সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আব্দুল গফুরের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বাতায়ন২৪ডটকম/শরিফুল ইসলাম।