স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক সংগঠন ‘ফিরেদেখা’-র উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বিশেষ ৩৮৮তম মননপাঠের আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর আইডিয়া পাঠাগারে আয়োজন করা এ আসরের শিরোনাম ছিল ‘রোকেয়া চিন্তার উত্তরসূরী’।
মননপাঠের আলঙ্কারিক সভাপতিত্ব করেন লেখক ও সাংবাদিক লাবনী ইয়াসমিন লুনি। তিনি বলেন, “উচ্চবিত্ত পরিবারে জন্ম নিয়েও রোকেয়া শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সংগ্রাম করে নিজেকে শিক্ষিত করে তিনি নারী সমাজকে পথ দেখিয়েছেন। আজকের নারীদের অগ্রগতি তাঁরই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা।” অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন কবি সাকিল মাসুদ।
আলোচনায় অংশ নেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও লেখক সুশান্ত চন্দ্র খান, কবি ও গীতিকার আব্দুর রশিদ, লেখক ও বিএড কলেজের সহকারী অধ্যাপক বাবুল সরকার, কবি আহমেদ মওদুদ, কবি কাইয়ুম খান, নীল রতন সরকার, শান্তনা পারভীন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাফা সুলতানা।
বক্তারা বলেন, রোকেয়ার মৃত্যুর প্রায় এক শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও আধুনিক নারীরা এখনো তাঁর চিন্তার পূর্ণ উত্তরসূরি হতে পারেননি। তাই তার ভাবনার যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ আরও জোরদার করা জরুরি। তারা মনে করেন, রোকেয়া যে জ্ঞানচর্চা, স্বাধীনতা ও সাম্যের দৃষ্টিভঙ্গি রেখে গেছেন তা বর্তমান সমাজেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাফা সুলতানা বলেন, “রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী জাগরণের বীজ বপন করে গিয়েছেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তিনি নারীর স্বাধীনতা ও মর্যাদার কথা বলেছেন।”
সহকারী অধ্যাপক বাবুল সরকার মন্তব্য করেন, “আজকের নারী সমাজের অগ্রগতির মূল ভিত্তি রোকেয়ার শিক্ষা-চিন্তা। তিনি নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সবসময় অনুপ্রাণিত করেছেন।”
কবি আহমেদ মওদুদ বলেন, রোকেয়ার কাজ নারীর উন্নয়নকে শুধু ত্বরান্বিত করেনি, পুরুষের সামাজিক ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
কবি সাকিল মাসুদ রোকেয়ার ভাষাবিষয়ক একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরেন, “এখানকার মুসলমানেরা মাতৃহীন-অর্থাৎ আমাদের মাতৃভাষা নাই…” এবং বলেন, এই মন্তব্য এখনও ভাষাচর্চার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মননপাঠের এই বিশেষ আসর নারীর উন্নয়ন, শিক্ষা ও মুক্তচিন্তার প্রসারে নতুন আলোচনার পথ উন্মুক্ত করেছে।
বাতায়ন২৪ডটকম।।মেমোহি।।