স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রংপুর।। বাতায়ন ২৪ডটকম।।১৭ বছরের
নির্যাতনকারীরা পয়সা ওয়ালা হলেও পয়সা নিয়ে তাদের আস্তে করে সীমান্ত পার করে দিবেন না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগের যারা ১৭ বছর নির্যাতন অত্যাচার করেছে, তাদের খালোতো ভাই, ফুফাতো ভাই চাচাতো ভাই, মামা চাচা বলে রক্ষা না করা যাবে না। বলছি না তাদের ধরে মারেন। তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করে দিন। আদালতে তাদের বিচার হবে। আপনাদের হাতে কারো বিচার করবেন না বলে মন্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
বুধবার ( ৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫ টায় রংপুরমহানগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে একথা বলেন তিনি। মহানগর আহবায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, জেলা আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা সদস্য সচবি আনিছুর রহমান লাকুসহ স্থাণীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
পয়সার বিনিময়ে আওয়ামীলীগ-জাতীয় পার্টির কাউকে সীমান্ত পার না করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ আর পয়সা ওয়ালা হলে ভেতর দিয়ে মাল নিয়া পয়সা নিয়ে তাদের আস্তে করে পার করে দিবেন এই কাজটা করবেন না। এই কাজটা অনেক হয়েছে। আর যেন কেউ সীমানা অতিক্রম করতে না পারে। যারা এই কাজটা করেছে। তাদেরও বিচার হতে হবে। তবে এই বিচারটা হতে হবে সত্যিকার অর্থে জনগনের ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে।’
জুলাই বিপ্লবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিএনপির চেনামুখগুলো রাস্তায় না নামার কারণ ব্যাখ্যা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘ আমরা রাস্তায় নামলে হাসিনা প্রমান করতো এটা বিএনপির আন্দোলন। তখন হাসিনা ছাত্র আন্দোলন-বৈষম্য বিরোধী আন্দোলননা অন্যভাবে দমন করার চেস্টা করতো। সেকারণে আমরা চেনামুখ গুলো রাস্তায় নামতে পারি নাই। কিন্তু অচেনা মুখগুলো রাস্তায় নামিয়ে আন্দোলন চালিয়ে গেছি তারেক রহমানের সাথে আমরাও। অর্থাৎ একটা ফ্যাসিবাদি শাসকে ক্ষমতা থেকে হটাতে যত কৌশল লাগে সেউ কৌশলে আমরা যুদ্ধ করেছি। ‘
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের নেতৃত্বে বিএনপি আন্দোলন করে হাসিনার পতন ঘটিয়েছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা স্বীকার করি বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের ব্যানারের অধীনেই আমরা আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি। তারা সামনের কাতারে ছিল। তারা ছিলেন সমন্বয়ক। আমরা তাদের সম্মানের সাথে রাখবো। তারা রক্ত দিয়েছে। তারা কোন দলের নয়। তারা জনগনের পক্ষে রক্ত দিয়েছে। তারা গণতন্ত্রের পক্ষে রক্ত দিয়েছে। তারা আইনের শাসনের জন্য ন্যায় বিচারের জন্য রক্ত দিয়েছে। সুতরাং শহীদরা জনগনের ভিতরে একটা শ্রদ্ধার জায়গা দখল করে আছে। শহীদদেরকে কেউ নেতাকর্মী বানাবেন না। তারা সকলের উর্ধে। ‘
বিএনপির কারণে জুলাই সদন হচ্ছে না এ ধরণের গুজব বন্ধ করতেই অনেক কথা থাকা সত্বেও জুলাই সনদে মতামত দেয়ার দাবি করে গয়েশ্বর বলেন,‘ যে জুলাই ঘোষণা পত্র দেয়া হয়েছে। সেখানে আমাদের মতামত আছে। সব কথার সাথে আমরা একমত না হলেও বিএনপির কারণে ঘোষণা পত্র দিতে পারছে না বলে একটা আওয়াজ তুলছিল। সেই আওয়াজটা বন্ধ করার জন্য আমরা অনেক ক্ষেত্রেই সহনশীল ভূমিকা পালন করছি। অনেক কথা থাকলেও সব কথা আমরা তাদের সাথে বলিনি। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি।’
আগামী দিনে ক্ষমতা নয় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিবে বিএনপি উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, ‘আগামী দিন আপনাদের হাতে ক্ষমতা আসছে না। কি মন খারাপ হয়ে গেলো। আগামী দিন জনগণ দেশ চালানোর দায়িত্ব দিবে। যদি ভাবতে পারেন ক্ষমতায় আসি নাই। দায়িত্বে এসেছি। তাহলে আপনারা জনগনের হতে পারবেন। আর যদি ক্ষমতার ভাব উঠে আপনাদের মধ্যে তাহলে কিন্তু হাসিনা যা করছে তার মতো হবে হবে। সেকারণে দায়িত্বশীল নেতাকর্মী নির্বাচন করতে হবে। গুরু দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পিত হবে। আপনরা সঠিকভাবে দায়িত্বপালনের মাধ্যমে জনগনের আকাংখার প্রতিফলন ঘটাবেন। সেদিন জাতির প্রত্যাশা পূরণ হবে। ‘
নির্বাচিত সরকারের অধীনে বিচার নিশ্চিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে গয়েষ্বর বলেন, ‘বিচার চলমান প্রক্রিয়া, সুতরাং নির্বাচন হলে নির্বাচিত সরকারের পক্ষে বিচার করাটা আরও সহজ হয়ে যাবে। বিচার সরকার করবে না। বিচার হবে বিচারকদের বিবেক ও আইন দ্বারা। হাসিনা দেশে আসুক বা না আসুক অপরাধীর বিচার করতে কোন অসুবিধা নাই। ’
পরে একটি বিশাল বিজয় র্যালীতে নেতৃত্ব দেন তিনি। র্যালিটি নগরীর জীবন বীমা মোড়, প্রেসক্লাব চত্বর, জাহাজ কোম্পানী মোড়, পায়রা চত্বর, সুপার মার্কেট মোড়, নগর ভবন, টাউন হল, কাচারী বাজার, হয়ে জিলা স্কুল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এতে হাজার হাজার বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহেযাগি সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
বাতায়ন ২৪ডটকম/শরিফুল ইসলাম।