নারীদের ফুটবল খেলা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের
নেতাকর্মীদের আপত্তি: ১৪৪ ধারা জারি
বাতায়ন২৪ডটকম/সিনিয়র করেসপনডেন্ট,
রংপুরে আন্ত:জেলা নারী ফুটবল খেলা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের প্রতিবাদের মুখে ১৪৪ ধারা জারী করেছে প্রশাসন। এতে আর সেখানে খেলা অনুষ্ঠিত হয় নি। বাধাদানকারীদের দাবি বড় নারীদের খেলা আয়োজনের মধ্যদিয়ে এলাকায় অশ্লীলতা ছড়ানোর চেস্টা করায় বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার ( ৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ২ টায় তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই আদেশ জারি করে প্রশাসন।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা জানান, বৃহস্পতিবার ( ৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিন বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আন্ত:জেলা আন্ত:জেলা নারী ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নয়নের নেতৃত্বে স্থানীয় ১০০ জনের একটি কমিটি এই খেলার আয়োজন করেছিল।
বেশ কয়েকদিন থেকে প্রচার প্রচারণাও করা হচ্ছিল। এনিয়ে নারী ফুটবল খেলাকে অশ্লীলতা দাবি করে খেলাটি বন্ধ করার জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা। আমরা উভয়পক্ষের সাথে সমঝোতা করে খেলাটি অনুষ্ঠানের জন্য চেস্টা চালিয়ে যাই। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা খেলা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠায় আমরা সমাধানের জন্য উপজেলা অডিটোরিয়ামে ২ বার বসি। সেখানে পুলিশ-সেনাবাহিনী ছাড়াও বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ রাজনৈতিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সভায় দুই পক্ষই অনঢ অবস্থানে থাকেন। ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী কোনভাবেই খেলা না করার পক্ষে অবস্থান নেন। এনিয়ে আইন শৃংখলার অবনতি ঘটার শংকা দেখা দেয়।বিষয়টি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে জানানো হলে তার নির্দেশে দুপুর ২ টা থেকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজনকে মাইকিং করে মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তবে খেলা আয়োজনের জন্য প্রশাসনের সাথে আগাম কোন কথা আয়োজকরা বলেননিও বলে জানান ইউএনও।
এদিবে খেলা দেখতে সকাল থেকেই মাঠে বিপুল পরিমান দর্শক উপস্থিত হন। পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরাও জড়ো হন। ১৪৪ ধারা জারির পর নারী ফুটবল খেলাটি বন্ধ হয়ে যায়। বুড়িরহাট বাজারের আশেপাশে দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়। মাঠ ও বাজারে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ টহল বাড়ানো হয়। তারা আস্তে আস্তে মাঠ থেকেম দর্শক, আয়োজক এবং ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন।
খেলা কমিটির আহবায়ক সয়ার ইউনিয়র বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নয়ন জানান, ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের পর এলাকাবাসির অনুরোধে আমরা ১০০ জনকে নিয়ে একটি কমিটি করি এবং এই খেলার উদ্যোগ নেই। কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এটা অশ্লীলতা দাবি করে খেলার দিন তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে মাঠে অবস্থান নেয়। প্রশাসন উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে। কিন্তু তারা ছাড় না দেয়ায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়েছে। আমরা চাই খেলাটি আবারও হোক, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বিষয়টি বুঝে ছাড় দিয়ে খেলা করতে দিবে বলেও আশা করেন তিনি। খেলা না হওয়ায় হাজার হাজার দর্শক ফিরে গেছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী জানান, খেলাটি যখন ঘোষণা করা হয় তখন থেকেই আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছি। তবুও তারা বড় নারীদের ফুটবল টুর্নামেন্ট বলে প্রচারণা চালিয়েছে। আমরা মনে করি বড় বড় নারীদের মাঠে এনে ফুটবল খেলার নামে অশ্লীলতা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটা ইসলামেও বারণ আছে। এরমাধ্যমে উঠতি বয়সিরা মারাত্বকভাবে অন্যায়ের দিকে প্রভাবিত হবে। সেকারণে আমরা প্রশাসনকে কয়েকদিন থেকেই বলে আসছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের কথা কানে নেয়নি। সেকারণে তৌহিদি জনতা খেলা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। কিন্তু বন্ধের উদ্যোগ আগে নিলে দর্শকরাও ঘুরে যেতে না। টাকা পয়সাও ক্ষতি হতো না। আমরা চাই ছেলেদের খেলা করলে আমাদের কোন আপত্তি নাই। ছেলেদের খেলায়ও হাজার হাজার দর্শক উপস্থিত হয়।
আশরাফ আলীর অভিযোগ, প্রশাসন ইচ্ছা করেই আগে বন্ধ না করে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এবং ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি সাইদুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি সমঝোতার মাধ্যমে খেলা অনুষ্ঠানের চেস্টা করা হয়েছিল। কিন্তু দুই পক্ষই অনঢ থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এখন পরিস্থিত শান্ত আছে।
রংপুর পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, নারী ফুটবল খেলা নিয়ে তারাগঞ্জের ইসলামী মনোভাবাপন্ন কিছু লোক তার বিরোধিতা করে আসছিল। দুইপক্ষই ছাড় না দেয়ায় পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সেখানে আর কোন
বাতায়ন২৪ডটকম/শরিফুল ইসলাম