স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, রংপুর ।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
পাওয়ার চায়নার কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন বলেছেন, ” আমরা এমন এক সময় তিস্তা নদীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এসেছি যখন এখানকার মানুষ জমি ভিটা সম্পদ হারিয়েছে। এজন্য আমরা শুনতে এসেছি এখানকার মানুষের কথা। এ প্রকল্প ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো প্রভাব ফেলবে না কারণ এটা একটা বাণিজ্যিক প্রকল্প। যে প্রকল্পে মানুষের উপকার হয় সে প্রকল্পে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গৌণ। এবং এ প্রকল্প পরিবেশে জন্য ক্ষতিকারক হবে না।’
সোমবার (১০ মার্চ) বেলা তিনটায় রংপুর জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ” তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা এবং পুনরুদ্ধার এসব প্রস্তাবিত প্রকল্পের উপর অংশীজনদের নিয়ে” মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
ডিসি মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিতে
মতবিনিময় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার চায়না, নদী আন্দোলনে যুক্ত নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিস্তায় ক্ষতবিক্ষত ভুক্তভোগী ছাড়াও গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ অংশনেন। শুরুতে প্রকল্পের উপর ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন পাওয়ার চায়নার কনসালটেন্ট প্রকৌশলী মকবুল হোসেন। পরে আলোচনায় অংশ নেন অংশীজনরা। এসময় বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপি আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিছুর রহমান লাকু,
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-
বাপার রংপুর জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কনক রহমান, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন ও রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র করেসপনডেন্ট সরকার মাজহারুল মান্নান, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের আহবায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ ইমতি, জেলা আহবায়ক ইমরান আহমেদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারাইন ক্লাবের শামসুর রহমান সুমন, গ্রিণ ভয়েসের সোহানুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় অংশীজনরা চীন ভারতের রশি টানাটানি বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহা পরিকল্পনার কাজ শুরুর দাবি জানান। বলেন, এই অন্তর্বতিকালীন সরকারের আমলেই এর কাজ উদ্বোধন করতে হবে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, উত্তরের জীবনরেখা তিস্তা অববাহিকার দুই কোটি মানুষের জীবন জীবিকা বাঁচাতে সরকারের সময়ে পরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে। তারা বিচ্ছিন্নভাবে নদীর কাজ করার বিপক্ষেও মত দেন। দাবি করেন তিস্তায় ক্ষতিগ্রস্ত সব পক্ষের কাছে শুনতে হবে কথা। তিস্তায় যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান দখল করে আছে। তাদের সরিয়ে দিতে হবে। দখলমুক্ত করতে হবে তিস্তা।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তায় গণ শুনানিতে অংশ নিয়ে তিস্তা অববাহিকার ৫ জেলার মানুষের সাথে মত বিনিময় করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে রোববার (৯ মার্চ ) গাইবান্ধায় এবং সোমবার (১০ মার্চ) রংপুরে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী মঙ্গলবার (১১ মার্চ) লালমনিরহাট, (বুধবার (১২ মার্চ) নীলফামারী এবং বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) কুড়িগ্রামে ও নীলফামারীতে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।
মতবিনিময় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড ছাড়াও সকল পরামর্শ নোট করা হচ্ছে। এর সবকিছুই পানি সম্পদ উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হবে। তারপরই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের একটি চূড়ান্ত রূপরেখা করা হবে।
বাতায়ন২৪ডটকম/শরিফুল ইসলাম।