সংবাদ শিরোনাম :
রংপুরে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল :বিক্ষোভ মিছিল পীরগঞ্জের বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে একজনের মৃত্যু লালমনিরহাটের নকল ডিসি, এসপি গ্রেফতার রংপুরে নকলের ভিডিও করায় ৫ সাংবাদিকের ওপর হামলা ও ক্যামেরা ভাংচুর পীরগঞ্জে হিরোইন সহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার  ডিআইজির কাছে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের স্মারকলিপি, মামলা প্রত্যাহার ও হুমকিদাতাদের গ্রেফতার দাবি রংপুরে তিস্তা গণপদযাত্রায়:ভারত পানিকে মারনাস্ত্র-যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে: মীজা আব্বাস লালমনিরহাটে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, তিন লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ লালমনিরহাটে মাদক, জুয়া ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদে মানববন্ধন পীরগঞ্জে এইচ এসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
রংপুরে তিস্তা গণপদযাত্রায়:ভারত পানিকে মারনাস্ত্র-যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে: মীজা আব্বাস

রংপুরে তিস্তা গণপদযাত্রায়:ভারত পানিকে মারনাস্ত্র-যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে: মীজা আব্বাস

স্পেশাল করেসপনডেন্ট,রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য মীর্জা আব্বাস বলেছেন, পৃথিবীর মধ্যে ভারতই একমাত্র দেশ। যারা পানিকে মারনাস্ত্র -যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। বিগত সময়ে হাসিনার চামচামি সরকারের কারণে তিস্তায় পানি আসেনি। গণ আন্দোলনের মাধ্যমেই তিস্তায় পানি নিশ্চিত করা হবে।

 

রোববার (৪ এপ্রিল) সন্ধায় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে রংপুর মহানগরীর শাপল চত্বরে তিস্তা মহানপরিকল্পনার কাজ শুরু এবং তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গণপদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন কথা বলেন মির্জা আব্বাস। আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদ অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল খালেক, রংপুর মহানগর আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু জেলা আহবায়ক সাইফুল ইসলামসহ ৫ জেলার নেতৃবৃন্দ। সঞ্চালনা করেন রংপুর মহানগর সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন ও জেলা সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু।

 

ভারতের বিরুদ্ধে পানিকে মারনাস্ত্র ও যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করে মীর্জা আব্বাস বলেন, ‘ আমি বিশ্বাস করি এই দাবি এই পানির ন্যয্য হিস্যা ইনশাআল্লাহ আমরা আদায় করে ছাড়বো। পানি কখনও মারনাস্ত্র হতে পারে না। পানি কখনও যুদ্ধাস্ত্র হতে পারে না। একমাত্র সারা বিশ্বে ভারত দে দেখিয়ে দিলো পানিকে তারা মারনাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। পানিকে তারা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। কতুটুকু অমানবিক হলে এই কাজ তারা (ভারত) করতে পারে। ‘

 

কারবালার প্রান্তরে নবী (স) এর দৌহিত্রের পানি অভাবে শহীদ হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে আব্বাস বলেন, ‘ এই পানি নিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ স. এর দৌহিত্রকে কস্ট দেয়া হয়েছিল। তিনি শাহাদত বরণ করেছিলেন। আজকে সারা বাংলাদেশকে, শুধু তিস্তা নয়, ৫৪ টি নদীর অভিন্ন পানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। তারা তিস্তা বন্ধ করেছে। ফারাক্কা বন্ধ করেছে। সুরমা কুশিয়ারা বন্ধ করেছে। সব অভিন্ন নদীর পানি তারা বন্ধ করেছে।’

 

হাসিনার কারণে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্ছিত বাংলাদেশের মানুষ দাবি করে আব্বাস বলেন, ‘ অনেক আগেই আমরা এই পানির হিস্য আদায় করতে পারতাম। যদি হাসিনার মতো একটা চামচা সরকার বাংলাদেশে না আসতো। পানি নিয়ে তারা কোন কথা কোনদিনও বলে নাই। আমরা বখশিশ চাই না। আমরা ভিক্ষা চাই না। আমরা হিসাবের পাওনা চাই। আমাদের হিসাবের পাওনা দিতে হবে। আজকে না হোক কাল। কাল না হোক পরশু। দিতে হবে ভারতকে দিতে হবে। না দেয়া পর্যন্ত শুরু হওয়া এই আন্দোলন থামবে না।’

 

সুরমা নদীর পানি ইস্যুকে ইলিয়াস আলীকে ভারত গুম ও খুন করেছে দাবি করে বিএনপি নেতা আব্বাস বলেন, ‘ ইলিয়াস আলীকে গুম করা হলো। হত্যা করা হলো। শুধু সুরমার পানি নিয়ে কথা বলার কারণে। তিস্তার পানি নিয়ে দুলু কথা বলেছে। দুলুও যেন সাবধান থাকে। কারণ ভারত কখনও এই ধরণের প্রতিবাদ সহ্য করতে পারে না। দুলু উত্তরবঙ্গের একটা প্রতিবাদি মুখ। তার নেতৃত্বে অহিংস প্রতিবাদ হচ্ছে। সারা বিশ্বের সামনে এই দাবি তুলে ধরা হলো। আমি মনে করি পত্র পত্রিকা ও মিডিয়ার মাধ্যমে এই দাবি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। যে ভারত পানি বন্ধ করে পানির অভাব দিয়ে আমাদের কিভাবে কস্ট দিচ্ছে, কিভাবে আমাদের মরুভুমিতে রুপান্তরিত করেছে। সব হিস্যা ভারতের কাছে থেকে আদায় করা কবে। ‘

 

 

মানুষের ঢল: সরেজমিনে দেখো গেছে, রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্বর। বিকেল ৪ টার আগেই হাজার মানুষের উপিস্থিতিতে সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। মানুষের উপস্থিত ছড়িয়ে পড়ে লালবাগ রোড, স্টেশন রোড, জাহাজ কোম্পাণী রোড, টার্মিনাল রোডে। উপলক্ষ রংপুর অঞ্চলের ২ কোটি মানুষের লাইফলাইন তিস্তার পানির হিস্যা আদায় এবং তিস্তা মহানপরিকল্পনার কাজ শুরুর দাবিতে গণপদযাত্রা। জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই শ্রোগানে প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে অংশ নেন তারা। সমাবেশে তিস্তায় ক্ষত বিক্ষত জীবন জীবিকা ও আন্দোলন নিয়ে একটি ডকুমেন্টরি উপস্থাপন করা হয়। পরে শুরু হয় গণপদযাত্রা। সাথে প্রতিবাদ ও তিস্তা পাড়ের গান। শাপলা থেকে গ্রান্ড হোটেল মোড়, জাহাজ কোম্পানী মোড়, সুপার মার্কেট, নগর ভবন, কাচারী বাজার হয়ে গণপদযাত্রা শেষ হয় জিলা স্কুল মাঠে। তখনও শাপলা চত্বর পর্যন্ত মানুষে মানুষে ঠাসা। পদযাত্রায় বাড়তি আকর্ষন ছিল তিস্তা নিয়ে ভ্রাম্যমান ট্রাকে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

অংশগ্রহনকারীদের দাবী, তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে এই সরকারের আমলেই। এর কোন বিকল্প তারা চান না। কোন গড়িমসি চলবে না। একই সাথে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে হলেও তারা তিস্তার পানি ভারতের কাছ থেকে আদায় করতে সরকারের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করেন।

এর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনে তিস্তা অববাহিকার দুই পাড়ে একই দাবিতে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারী ৪৮ ঘন্টার লাগাতর কর্মসূচি পালন করেছিল তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

বাতায়ন২৪ডটকম/শরিফুল ইসলাম

 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved © batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com