সংবাদ শিরোনাম :
নিজের মতাদর্শের সরকার থাকলেও চোখে চোখ রেখে কথা বলতে ও লিখতে পারলেই সাংবাদিকদের দুর্ভোগ ও হতাশার মুক্তি মিলবে রংপুরে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই যুবক গ্রেফতার হার্টে রিং পরাতে গিয়ে রোগীর মৃত্যু, মারধরের শিকার স্বজনরা (ভিডিও) ৭ নভেম্বরের চেতনায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত অবস্থার তথ্য চেয়েছে ইসি জাতীয় লজিস্টিকস নীতি-২০২৫ অনুমোদন, বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে আসবে গতি নগরীর বাস টার্মিনাল এলাকায় রংপুর-৩ আসনের এমপি সামুর গণসংযোগ  রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জিয়াউর রহমানের আবির্ভাবের সন্ধিক্ষণ ছিল ৭ই নভেম্বর গুম প্রতিরোধ অধ্যাদেশ অনুমোদন : সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, বিচার শেষ করতে হবে ১২০ দিনে

ডিজিটাল মামলায় খালাস পেলেন রংপুরের তিন সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম

রংপুরে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন তিন সাংবাদিক। সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে দীর্ঘ শুনানি শেষে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবদুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

বেকসুর খালাস পাওয়া তিন সাংবাদিক হলেন : অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের নীলফামারী প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম, দৈনিক যুগের আলো ও মানবকণ্ঠের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মখদুমী এবং দেশ রূপান্তরের সাবেক প্রতিনিধি মামুন রশিদ। শরিফুল ইসলাম এর আগে অনলাইন পোর্টাল রংপুরের কণ্ঠে কাজ করতেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী, মামুন রশিদ ও শরিফুল ইসলাম।

সংবাদ প্রকাশের কারণে ইউপি চেয়ারম্যানের মানহানির অভিযোগে তার শ্বশুর মোস্তাফিজার রাহমান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৪ জুন রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় দৈনিক যুগের আলো ও মানবকণ্ঠ পত্রিকায় ২০২১ সালের ২৪ মে ‘ভিজিডির কার্ডে চাল নেন সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের শাশুড়ি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী। একই দিনে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রংপুরের কণ্ঠের সাংবাদিক একই শিরোনামে খবর প্রকাশ করেন।
দেশ রূপান্তর পত্রিকায়ও একই খবর প্রকাশিত হয়।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে সদ্যপুস্করণী ইউপির চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং বাদীর স্ত্রী ও জামাতার সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

গত বছরের ২৫ আগস্ট বিচার কার্যক্রম শুরুর পর থেকে আদালত বিভিন্ন সময়ে আটজন সাক্ষীর মধ্যে পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

এরপর আজ বিচারের রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ দিন বাদীপক্ষের অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ ৪০ মিনিট বিচারকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। বাদীর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের বেকসুর খালাস দেন।
সাংবাদিক মহিউদ্দিন মখদুমী বলেন, আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি।

আদালত স্বাধীনভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বেকসুর খালাস পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিক মামুন রশিদ বলেন, ২০১৯ সালে ভিজিএফের চাল অন্যত্র সরিয়ে রাখার অভিযোগে র‌্যাব-১৩ অভিযান চালিয়ে সদ্যপুস্করিণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে আটক করেছিলেন। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

ঘটনার কিছুদিন পর ওই মামলায় জামিন পান চেয়ারম্যান। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এই চেয়ারম্যান ভিজিডি কার্ড নিয়ে আত্মীয়করণ করে প্রকৃত হতদরিদ্র ও দুস্থদের বঞ্চিত করেছেন। এই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে তার স্বজনকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছিলেন।

অথচ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। শুধু তাই নয়, যারা এই দুর্নীতির সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার করেছেন, তাদেরও ছাড় দেননি চেয়ারম্যান ও তার স্বজনেরা।

সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে নিয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ করিনি। আমি দুর্নীতির সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছিলাম। এ কারণে আমাকে আসামি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান কৌশলে মামলা করে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করেছেন। আমরা দেরিতে হলেও আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছি। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন হয়রানিমূলক মামলার শিকার না হয়, এ জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিও জানান তিনি।

এদিকে মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ বলেন, মামলায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।

 বাতায়ন২৪ডটকম

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved © batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com