• কর্তৃত্ব, প্রভুত্ব ও আভিজাত্য বুঝাতে বঙ্গদেশে ‘SIR’ শব্দের প্রচলন শুরু হয় ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপনের সময় থেকে। ইংরেজরা আসার পর প্রশাসনিক কর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের রেওয়াজ চালু হয়। মূলত শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ শাসকদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জুতসই শব্দ স্যার। প্রভুত্ব স্বীকারের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ শব্দ বহুল পরিচিত।ব্রিটিশ আমলে গঠিত হয় প্রাশাসনিক ক্যাডার সার্ভিস- ICS( Indian Civil Service).। রূপান্তরিত হয়ে বাংলাদেশে এটা হয়েছে BCS ক্যাডার সার্ভিস।দেশ স্বাধীন হলেও বাংলাদেশের প্রশাসনিক সার্ভিস,নন ক্যাডার সার্ভিস,স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরেই উপনিবেশিক আমলে গড়ে ওঠা Sir- শব্দের ব্যবহার বহুল প্রচলিত।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রশাসনের অধিনস্থ কর্মকতা ও কর্মচারীরা উর্ধ্বতন আধিকারিকদের Sir বলে সম্বোধন করে থাকেন।এটি শৃঙ্খলার প্রথাগত পিলার হিসেবে বেশ শক্তপোক্তভাবেই বিদ্যমান।সম্মানসূচকও বটে!বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও রাষ্ট্রটি উত্তরাধীকারসূত্রে প্রাপ্ত উপনিবেশিক আমলের কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থাপনার রীতি-প্রথা- পদ্ধতি- মূল্যবোধ বহন করেই চলছে।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও এর বাইরে নয় ।রংপুরের Sir কান্ড ওই রোগের উপসর্গ।একে বিচ্ছিন্নভাবে মূল্যায়ন করা ঠিক হবেনা।
বাঙালি শংকর জাতি,বাঙলা ভাষায় অনেক বিদেশি ভাষার সংমিশ্রণ ঘটেছে।বিদেশিদের সব খারাপ তা কিন্তু সঠিক না।স্যার শব্দটিকে সম্মান সূচক অর্থে ব্যবহারে আপত্তি থাকার কথা নয়।বেরোবির সব শিক্ষক ভিসিকে স্যার বলেই সম্বোধন করেন,এতে দোষের কিছু নেই ।প্রভুত্ব, কর্তৃত্ব ও আভিজাত্যের ডাক হিসেবে যারা স্যার শুনতে চান বিদ্রোহ তাদের বিরুদ্ধে।যে চেয়ার সম্মানের সেই চেয়ারে নারী বসলেও তাকে সম্মান দিতে হবে।এক্ষেত্রে বৈষম্যের দৃষ্টিভঙ্গি যুক্তিযুক্ত হতে পারে না।
sir একটি পুরুষবাচক শব্দ- মানে পুংলিঙ্গ। এর স্ত্রীলিঙ্গ হলো ম্যাডেম (madam), বাংলা অভিধান -sir এর অর্থ – বাবু, জনাব, মহাশয়, হুজুর, শ্রদ্ধাভাজন।পুরুষতান্ত্রিক সমাজে লিঙ্গবোধক শব্দ চলু থাকলেও লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছেন অনেক জ্যোতির্ময় সাহসী নারী।
Leave a Reply