•ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কিছু গণমাধ্যমে ১০০ গ্রাম, ২০০ গ্রাম কিংবা ২৫০ গ্রাম গোশত ক্রয়ের সুযোগ এবং কোন কোন বিক্রেতার ১০০ টাকার গোশত বিক্রির অফারের তথ্য আমরা পাচ্ছি। একজন সামান্য গণমাধ্যমকর্মী এবং মধ্যবিত্ব পরিবারের সন্তান হিসেবে বিষয়টি আমার কাছে হাস্যকর এবং বাস্তবতা বিবর্জিত মনে হয়েছে।
আমি আমার কথাই বলি, যদি মা এবং আত্মীয় স্বজন বাড়িতে না থাকেন, তাহলে মোটামুটি চারজন মিলে আমরা তিনবেলা খাওয়ার চেস্টা করি। এক কেজি গরুর গোশত খাওয়ার মতো সাইজ করলে কোনভাবেই সেটি ২৪ টুকরার বেশি করার সুযোগ থাকে কিনা, আমার জানা নেই। এরমধ্যে আবার চর্বি, হাড়-হাড্ডি তো আছে। তাহলে যদি আমি ১০০ গ্রাম গোশত ক্রয় করি তাতে ২ দশমিক ৪ টুকরা, ২০০ গ্রামে ৪ দশমিক ৮ টুকরা, ২৫০ গ্রামে ৬ টুকরা গোশত কিনতে পাবো। অপর পক্ষে এখন এক কেজি গরুর গোশত ৭০০ টাকার নিচে ক্রয় করার কোন সুযোগই নেই। তাহলে যে সব অতি উৎসাহী বিক্রেতা ১০০ টাকার গরুর গোশত বিক্রি করতে চাইছেন, দর হিসেবে তাতে ৭০ গ্রাম গোশত বিক্রি করতে হবে।তাতে পাওয়া যাবে ১ দশমিক ৬৮ টুকরা গোশত।
উল্লেখিত পরিমাণ গোশত ক্রয় করে তা রান্না করা কতটা সহজ হবে, কিংবা তাতে যে পিয়াজ, মরিচ ও মসলা এবং জ্বালানী খরচ হবে সেটা আমি জানি না। আমার পরিবারে যদি আমি ২৫০ গ্রাম গরুর গোশত ক্রয় করি, সেটা আমরা যদি চারজন বাসায় থাকি, তাহলে রান্না করলে কিভাবে খাবো। আবার মা কিংবা আত্মীয় স্বজন যদি থাকে তাহলে তাদের কিভাবে পরিবেশন করবো সেটা কোন হিসেবেই মেলাতে পারিনা আমি।
আমার বাস্তবতায় আমি মনে করি, এইসব সস্তা চিন্তা এবং উদ্যোগ হাইপোথিক্যাল।এক্ষুণি এসব থেকে সরে আসা উচিৎ। বরং একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ের ছোট্র বাজার থেকে শহর নগরের সব বাজারে জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসন এক হয়ে কঠোরভাবে বাজার সিন্ডিকেটের হাড়গোড় ভেঙ্গে দিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ এবং কঠোরভাবে তা বাস্তবায়ন জরুরী। তাতে আমরা আমাদের যেমন রোজগার ( অবৈধ রোজগেরেদের কথা আলাদা) তা দিয়ে যার যতটুকু লাগবে সেটা স্বাচ্ছন্দে ক্রয় করতে পারি।
আরেকটি বিষয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গরুর গোশতের দরের বিষয়ে পার্শবর্তি দেশগুলোর একটি পরিসংখ্যান হরহামেশাই দেখি। সেটা হলো কলকাতায় প্রতি কেজি ১৭৫ রুপি বা বাংলাদেশী ২২৪ টাকা, পাকিস্তানে ৬০০ রুপি বা ২৩০ টাকা, নেপালে ০ দশমিক ৭৬ ইউএস ডলার বা ৮০ টাকা, ভুটানে ১৬০ নুল বা ২০৭ টাকা।
যদি এই হিসেব ঠিক থাকে, অথবা কম-বেশি আঠরো-কুড়িও হয়। তাহলে আমাদের দেশে গরুর গোশতের দাম তিন গুন হয় কিভাবে। যদিও এর কারণ আমরা সবাই জানি। এটার এক্ষনি সুরাহা হওয়া প্রয়োজন মনে করি। আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে বিনয়ের সাথে দাবি জানাই, আপনাদের আমাদের বেঁচে থাকার স্বার্থে গোশতসহ সব পণ্যের দাম কমিয়ে আনতে কঠোর পদক্ষেপ নিন।সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিন। সেটা যত বড় শক্তিশালীই হোক।আমাদের রোজগার দিয়ে আমাদের পুস্টি চাহিদা মেটানোর সুযোগ করে দিন।
লেখক:-
সরকার মাজহারুল মান্নান
সম্পাদক ও প্রকাশক,বাতায়ন২৪ ডট কম
Leave a Reply