বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

রংপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

রংপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

বদরগঞ্জ সংবাদদাতা:-

রংপুরের বদরগঞ্জ লোহানী পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ প্রধান শিক্ষকের নাম মোয়াজ্জেম হোসেন ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের নাম শফিকুল ইসলাম।

এ বিষয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের দশ জন অভিভাবক।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে লোহানী পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য ৫০ শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে গত জানুয়ারীর মাসের ২১ ও ২২ তারিখে ডেকে নিয়ে জন প্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা আদায় করেছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন বদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে সুসম্পর্ক থাকায় ইউনিক আইডি ফি, ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, এসাইনমেন্ট ও পরীক্ষার ফি কোন ধরনের অর্থ কমিটি ছাড়াই অর্থ আদায় ও উত্তোলন করে বিদ্যালয়ের কোন প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড না করে তা আত্মসাৎ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, শুধু ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ই নয়, ইউনিক আইডি তৈরির জন্য প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেছেন অর্থ দিতে। এছাড়া কভিড কালে এসএসসি ফরম পূরণের অর্থ বোর্ড ফেরত দিলেও কোন শিক্ষার্থীকে সে অর্থ ফেরত দেয়নি এমনকি কভডিকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকলেও বেতন, পরীক্ষা ফি সহ সকল ফি আদায় করেছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিক বার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

লোহানী পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির (এডহক) সভাপতি হাবিব লোহানী বলেন, যারা নিয়মিত তাদের থেকে বোর্ডের নির্ধারিত ফি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যারা অকৃতকার্য তারা ফরম পূরণের সময় পার হয়ে গেলে কিছু অভিভাবক ফরম পূরণের জন্য অনুরোধ করে। প্রধান শিক্ষক বোর্ডের অতিরিক্ত ফি এবং যাতায়াত মিলে এই টাকা নিয়েছে। যেটা আমি জানতাম না। পরবর্তীতে আমি বলেছি তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। কিন্তু অভিভাবকরা সেটা ফেরত নিতে চাননি বলেছেন যা হবার হয়েছে। কিছু অভিভাবক এটা নিয়ে অভিযোগ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি লজ্জার একজন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ মানে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ। যদি অভিভাবকরা আসে আমি নিজে বসে থেকে তাদের অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করব। প্রধান শিক্ষক যাতে পরবর্তীতে এই এরকম কাজ না করে সেটা তাকে বলা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন এর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি মুঠোফোনটি বন্ধ করে দেন।

বদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে গত সপ্তাহে প্রধান শিক্ষক বলা হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য। আমি অফিসের কাজে বাহিরে থাকায় খোঁজ নিতে পারিনি আগামী কাল খোঁজ নিব অর্থ ফেরত দিয়েছে কি না। ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার বিষয়ে স্বীকার করেছেন। অকৃতকার্য হওয়ায় তাদের ফরম পুরণে বেশি খরচ হয়েছে। তবে এত বেশি খরচ হবার কথা নয়। তার যাতায়াত খরচ মিলে সর্বোচ্চ ২৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ  বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অনিয়ম হয়ে থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com