ঢাবি প্রতিবেদকঃ-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ফটোগ্রাফিক সোসাইটির ২০তম কমিটিতে সভাপতি পদের নির্বাচনে হেরে গিয়ে নির্বাচিত সভাপতিকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে না দিয়ে ‘শিবির’ ব্লেইম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম নকীব হাসান বাঁধন। তিনি বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং অভিযুক্ত কামরুল হাসান ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ঢাবি ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রতিবছর সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি দেয়া হলেও এবার দুইজন সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় মতানৈক্যে পৌঁছাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সভাপতি পদে নির্বাচন করে সিলেকশন কমিটি। গত ৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৬ টি ভোটের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ টি ভোট পায় নকীব। তা সত্বেও তাকে সভাপতি ঘোষণা না করে বরং বিভিন্ন হুমকি দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদ নেয়ার জন্য চাপ দেয় কামরুল ও তার সহযোগীরা। একইসাথে তার বিরুদ্ধে ‘জামাত-শিবির’ ব্লেম দেয়ারও অভিযোগও ওঠে।
নকীব হাসান বলেন, ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়ায় অজ্ঞাত কয়েকজন আমাকে টানাহেচড়া করে এবং হুমকি দেয়। এই নির্বাচনে জয় লাভ করার পরেও বিশেষ ব্যক্তির হস্তক্ষেপে আমাকে সাধারন সম্পাদক হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কামরুল হাসান। তিনি বলেন, কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে দাড়ায় তাহলে সে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথা বলবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে আমি যেহেতু আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, সেহেতু আমি আমার মেম্বারের প্রতি এরকম ব্যবহার করার চিন্তাও করতে পারি না।
নির্বাচনের ব্যপারে কামরুল বলেন, যদি সে নির্বাচিত হতো তাহলে তো ইলেকশন বোর্ড (নির্বাচন কমিশন) থাকত। এটা আসলে নির্বাচন হয় নি। ও (নকীব) বলতেছিল একটা মতামত নেয়ার জন্য, তো সিলেকশন বোর্ড মতামত নিয়েছে। মতামত নেয়ার পরও সিলেকশন বোর্ড মনে করেছে সে অযোগ্য, এরপর তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিলেকশন বোর্ড তো আর আমি গঠন করি নি।
ফটোগ্রাফি সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেকশন কমিটির সদস্য ঝন্টু বলেন, এই কমিটি সাধারণত সিলেকশনের মাধ্যমে হয়৷ কিন্তু এবার ঝামেলা হওয়ায় সবার থেকে মতামত নেয়া হয়। আমরা তাদের দুজনকে (নকিব ও অন্য সভাপতি পদপ্রার্থী) বলেছি নিজেরা মিটমাট করে নেয়ার জন্য। তারা যে সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটাই ঘোষণা দিবো।
এ বিষয়ে ফটোগ্রাফিক সোসাইটির উপদেষ্টা অধ্যাপক হাসান আল শাফির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে তবে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন হয়েছে, এখানে ফলাফল নিয়ে গড়িমসিটা সত্যিই বেমানান।
এদিকে অভিযুক্ত কামরুল হাসান, এর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিনতাইয়ে অভিযুক্ত থাকার মামলায় আটক হয়েছিলেন। প্রশাসনিক ভবন সুত্রে জানা যায়, পরীক্ষায় নকল করার কারণে তিনি বহিষ্কারও হয়েছিলেন।
এছাড়াও ফটোগ্রাফিক সোসাইটির কক্ষে মাদকসেবিদের নিয়ে আড্ডা দেয়া, সংগঠনের বাইরের মেয়েদের নিয়ে আড্ডা দেয়া, ১৯ তম কার্যনির্বাহী কমিটিতে অর্থ সম্পাদকের নিকট হিসাবের বিবরণ পেশ না করা, ক্লাবের সদস্যদের ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফি করিয়ে পেমেন্ট না করা, সদস্যদের নিয়ে ফটোওয়ার/আউটিং এ যাওয়া এমনকি বিভিন্ন সময় মদ্যপ অবস্থায় থেকে সংগঠনের প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকা, সংগঠনের সদস্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করা, সিনিয়রদের মারার হুমকি না দেয়া সহ আরো অনেক অভিযোগের কথা জানান সংগঠনের একাধিক সদস্য ও সাবেক সদস্যরা।
Leave a Reply