•হাসান আলী
মোহাম্মদ সাদেক হোসেন, সাভারে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পাশ করেছেন ৩৫ বছর আগে। দীর্ঘদিন পর আবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন আরবি বিভাগের এলামনাই আ্যসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে। এখানে এসেই সেই সময়কার বন্ধু-বান্ধব, ছোট ও বড় ভাইদের সাথে দেখা হওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে যান তিনি। অশ্রুসিক্ত নয়নে সবাইকে আলিঙ্গন করে খোঁজ খবর নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) এক কোণে ১০-১২টি চেয়ার নিয়ে গোল হয়ে বসে স্মৃতিচারণ করছেন কয়েকজন। তারা সবাই দীর্ঘদিন পর একসাথে হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এই সুযোগ হাতছাড়া করছেন না কেউই। পুরনো দিনের গল্প, স্মৃতিচারণ ও বর্তমানের খোঁজ খবর নিচ্ছেন একে অপরের। মনে হয় যেন তারা কখনো আলাদাই হয়ে যান নি।
দৃশ্যগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শতবর্ষী বিভাগসমূহের মধ্যে অন্যতম আরবি বিভাগ এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের দ্বিতীয় পুনর্মিলনী ও বার্ষিক সাধারণ সভার। আজ শনিবার দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৯ টা থেকে। সকালে অংশগ্রহণকারী এলামনাইদের রেজিষ্ট্রেশন ও নাস্তা সম্পন্ন হওয়ার পর একটি র্যালীর মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়।
আরবি বিভাগ থেকে ১৯৮৯-৯০ সেশনে পাশ করা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা সালেহ আহমদের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমাদের এই পুনর্মিলনীর মাধ্যমে আমরা এক হতে পেরেছি। অবশ্যই এটা আমাদের ভালোলাগার বিষয়। এলামনাই এসোসিয়েশনের সবাই অনেক কষ্ট করে সব আয়োজন করে আমাদের একত্রিত করেছে সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই৷ আমরা এখানে ছয়জন ব্যচমেট এসেছি, সবাই ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় কর্মরত। একসাথে হতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত।
সকাল ১১টায় টিএসসি অডিটোরিয়ামে জাতীয় সংগীত, কুরআন তিলোয়াত ও ইসলামী সংগীতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে আরবি বিভাগ এলামনাই আ্যসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউছুফের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এলামনাই আ্যসোসিয়েশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম। এছাড়াও বিকেলে এলামানাইয়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে জমকালো সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি অধ্যাপক ড. মো.আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমান বৃদ্ধিতে নিজ নিজ বিভাগে মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষনা পরিচালনার লক্ষ্যে একটি করে গবেষণা ফান্ড প্রতিষ্ঠার জন্য অ্যালামনাইদের প্রতি আহ্বান জানাই। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় যেমন সমৃদ্ধ হবে তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে। উদার, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ ধারন করে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অবদান অব্যাহত রাখার জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
Leave a Reply