ঢাবি প্রতিবেদকঃ-
স্বামী বিবেকানন্দ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ যুবক, একজন বিস্ময়কর প্রতিভা এবং বিশ্ব মানবতার প্রবক্তা। এটা একজন বাঙালি হিসেবে আমরা গর্বই করতে পারি। তিনি সত্যকে আলিঙ্গন শুধু করেন নাই, সত্যের সঙ্গে চলার জন্য তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, সত্যের সঙ্গে চলার জন্যে সাহস যুগিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বামী বিবেকানন্দের ১৬০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিশ্ব মানবতাকে বিবেকানন্দ ধারণ করেছেন। এটা অবশ্যই বর্তমানের সাথে প্রাসঙ্গিক। আমি এটুকুই বলবো স্বামী বিবেকানন্দকে এই ভূখণ্ডের মানুষ ধারণ করেছিল বলেই অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রবর্তক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এ ভুখন্ডের মানুষ আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেছিল। জাতির পিতার প্রতি যে আস্থা, আশ্বাস এবং বিশ্বাস আমরা রেখেছিলাম, এটা স্বামী বিবেকানন্দের যে মহানুভবতা, সেটা তার মধ্যে ছিল বলেই। সেই মানবতা এবং সাহস দিয়ে এই পরাধীন জাতিকে তিনি স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব মানবতা ও অসম্প্রদায়িকতার জন্য জাতির পিতা তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি কখনো সাম্প্রদায়িকতার কাছে আত্মসমর্পণ করেননি, তিনি কখনো মানবতার প্রশ্নে আত্মসমর্পণ করেননি। তিনি জীবন দিয়েছেন, তবু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করেননি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দকে আমাদের শুধু আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, এটাকে আমাদের ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা হয়তো খুব আত্মকেন্দ্রিক ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছি, কিন্তু সমষ্টিকে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেটার জন্যে স্বামী বিবেকানন্দের যে ভাবাদর্শ সেটাকে আমাদের ধারণ করতে হবে।
অসাম্প্রদায়িকতার ব্যপারে তিনি বলেন, বাঙালি জাতি আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে কিন্তু বিজয় অর্জন করেছি। এই মুক্তিযুদ্ধে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্মিলিতভাবে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আজ পর্যন্ত নির্ণয় হয় নাই কোন ধর্মের কতজন মানুষ এখানে রক্ত দিয়েছে। এই যে আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছি এই মানবিক বাংলাদেশকে আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।
এছাড়াও আলোচনা সভায় বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি অখিল চন্দ ভৌমিকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক করুণা কিশোর চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ মিশন ও রামকৃষ্ণ মঠ ঢাকার সম্পাদক ও বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদরে প্রধান পৃষ্ঠপোষক শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ, বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদের গভর্নিং বডির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, ঢাবি সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফাদার তপন কামিলুস ডি রোজারিও, পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নীরু বড়ুয়া এবং সারদা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমতি মীরা সাহা।
আলোচনা সভার শেষে বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে মেধাবী ও কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয় এবং পরিষদের বার্ষিক প্রকাশনার মোরক উন্মোচন করা হয় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply