•স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,রংপুর
যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে মুক্তি ও অনলাইন জুয়া থেকে ফেরাতে এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া সহ কিভাবে নিজের গ্রামকে মডেল গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলা যায় এসব নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে এএসপি সোহেল।
গত ২৪,২৫ ও ২৬ এপ্রিল লালদীঘি পীরপাল কলেজের মাঠে পড়ন্ত বিকেলে পাড়ার যুবকদের মাদক ও জুয়া না খেলার শপথ করান। সেখানেই নিজের পরিশ্রম,উঠে আসার গল্প সফলতার পিছনে অবদান এসব বিষয়ে কথা বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।এর আগেও তিনি স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্করকে সাথে নিয়ে নিজ গ্রামকে মডেল গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে বৈঠক করেন।সেখানে চেয়ারম্যান এর পাশাপাশি স্হানীয় ইউপি সদস্য, ও নানা বয়সী মানুষ উপস্থিত ছিলেন।পীরপাল কলেজে স্হানীয় যুবকদের মধ্যে উপস্থিত রহিম, বাবু, শাস্ত্রী, মোস্তাকিম রেজা, শিহাব, সালমান ফার্সি, হৃদয়, বাবু, আব্দুল জব্বার,রিফাত,রাজা,, আনিস, সোহাগ, সেলিম, রাশেদ,, হৃদয়, হাদিউর, শাহজালাল হিটলার মিন্টু সহ প্রায় ৫০ জন যুবক।
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সোহেল রানা শাস্ত্রী বলেন, অবশ্যই আমরা ইতিবাচক ভাবে দেখছি আমাদের বাড়ির পাশে সুযোগ্য বড় ভাই আমাদের জন্য নিজ থেকে এগিয়ে আসছেন আমাদের জন্য কিছু করতে।আমরা চেষ্টা করছি পারিনি আমাদের সোহেল রহমান শাস্ত্রী ভাই এর মাধ্যমে সকল অপকর্মের সমাধান হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর বলেন, বর্তমান ট্রেনিং অবস্থায় থেকেও গ্রামে এসে মাদক নির্মূলে কাজ করছে কিভাবে কি করা যায় উনার ওছিলায় এলাকা ভালো হবে, মাদক হল দেশের শত্রু মানুষের জীবনের শত্রু ওনি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসপি সোহেল রহমান শাস্ত্রী বলেন, “লালদীঘি বাজার কেন্দ্রীক গ্রামগুলোতে ইদানীং মাদকের প্রকোপ অনেক বেড়ে গেছে। সম্প্রতি তরুণদের মাদকের প্রতি আসক্ত হওয়ার প্রবণতা খুবই আশঙ্কাজনক। একই সাথে যুক্ত হয়েছে অনলাইন জুয়া। মাদক ও জুয়ার মত অসামাজিক ও বে-আইনি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে অনেকেই, যা আমাদের এলাকার ভবিষ্যতকে ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা যদি এখনই সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে এই মাদক ও জুয়া রুখে দিতে না পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে যে সুন্দর, সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার অঙ্গীকার সেটি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে যাবে। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি ও তরুণদের ভূমিকা সর্বাগ্রে।
সে জন্য ঈদের এই ছুটির ফাকে রাধানগর শাস্ত্রীপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়ার তরুণ সমাজ ও রাধানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেছি। সবাই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন যে সরকার ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স মেনেই এলাকাকে মাদকমুক্ত করা হবে।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন,আমি তরুণদের নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করার চেষ্টা করছি, যারা শাস্ত্রীপাড়া-ডাঙ্গাপাড়ায় বাইরে থেকে মাদকের চালান আসা ও মাদকসেবীদের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। সেই সাথে তারা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতাও করবে।
সোহেল রহমান শাস্ত্রী বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন ৪০ তম বিসিএস পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। পুলিশ ক্যাডার মেধা তালিকায় চতুর্থ।
সোহেল বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের শাস্ত্রী পাড়া গ্রামের মো সওকাত আলীর সন্তান। তিনি পড়াশোনা শুরু করেন মৌয়াগাছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এবং মাধ্যমিক কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন লালদিঘি ওএ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে।উচ্চমাধ্যমিক ভর্তি হন সৈয়দপুর সরকারি টেকনিক্যাল কলেজে এবং সেখান থেকে জিপিএ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউট থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্র সংসদে সর্বোচ্চ ভোটে অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন। পাশাপাশি তিনি প্রথমআলো বন্ধুসভার কেন্দ্রীয় সংগঠক ছিলেন।
সোহেল প্রথমবারের মতো ৪০ তম বিসিএস এ অংশগ্রহণ করেন এবং পুলিশের এএসপি পদে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন।
Leave a Reply