স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে স্লোগানের ভাষা নিয়ে বিরোধের জেরে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সোনা মিয়া (৫৫) খুনের মামলার প্রধান আসামী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের জামিন আবেদন নাকোচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশে দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম। সোমবার (০৫ জুন) বিকেলে রংপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতের বিচারক এই আদেশ দেন। এ নিয়ে এই ঘটনায় ৭৬ এজহার নামীয় আসামীর মধ্যে ৯ জন কারাগারে গেলেন।
রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল মালেক জানান, সোনামিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামী কাউনিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক নিম্ম আদালতে হাজির হওয়ার জন্য হাইকোর্টের আদেশে ৪ সপ্তাহের অন্তর্বতিকালীন জামিনে ছিলেন। সময় শেষ হওয়ায় তিনি সোমবার বিকেলে আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। জেলা ও দায়রা জজ শহিদুল ইসলাম তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।
কাউনিয়া থানার ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ জানান, এর আগে ২৯ এপ্রিল কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজমল হক লেবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও এই মামলায় আরও এজহার নামীয় ব্যক্তি হারাগাছ ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য মোজাম্মেল হক, ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য মকবুল সালাম, উপজেলা আওয়মীলীগের বহিস্কৃত সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, খানসামা হাটের বিকাশ দোকানদার মাইদুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ কর্মী আব্দুল গাফফার, আব্দুল জলিল ও আব্দুল খালেককে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২৪ এপ্রিল বিকেল ৪ টায় খানসামা হাট এলাকায় স্থানীয় এমপি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ঈদ শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে স্লোগানের ভাষা নিয়ে কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর সন্ধা সাড়ে ৭ টায় খানসামা হাটে দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষে স্থানীয় ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোখলেছুর রহমান মুকুলের চাচাতো ভাই ওই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ সোনা মিয়াকে (৫৫) চাপাতি ও চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে রাজ্জাক-রাজু গ্রুপের মধ্যে। সোনা মিয়া মেয়ের বাড়ি থেকে ঈদের দাওয়াত খেয়ে ওই বাজারে তার নাতনি আরশি মনিকে নিয়ে চা খেয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
এ ঘটনায় সোনা মিয়ার পুত্র আখতারুজ্জামান সোহেল বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাককে ১ নম্বর এবং তার ভাই রাজু আহমেদকে ২ নম্বরসহ ৭৬ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামাদের নামে হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনার পর থেকে আসামী গ্রেফতারে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ এনে প্রতিদিনই ওই এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। এছাড়াও এ ঘটনায় আসামী পক্ষ মামলা তুলে নেয়াসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকির ঘটনায় পরিবার এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের পক্ষ থেকে থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত আওয়ামীলীগের তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পরিচয়ে বাড়িতে প্রবেশ, প্রকৃত খুনিদের আড়াল এবং সোনা মিয়াকে বিএনপি কর্মী বানানোর অপচেস্টা অভিযোগ করে সামাহিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট এবং গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। এ ঘটনা নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বাতায়ন২৪ডটকম।।সমামা
Leave a Reply