মনিরুল ইসলাম মুকুল এর চারটি অণুগল্প-
একঃ-
তারপর থেকে আমাদের আর কথা হয়নি। কোনো সন্ধ্যার মেঘলা আকাশকে কল্পনা করে, কোনো ছবি আঁকা হয়ে ওঠেনি। ইচ্ছে ছিলো পুরো আকাশটা একদিন তার নামে লিখে দেবো। অথচ এগুলো এখন মিথ্যে অতীত। সে ভেবেছিলো মানুষকে অবহেলা করলে মানুষের গ্রহনযোগ্যতা বাড়ে। সব মানুষ অবহেলা সইতে পারে না। অবহেলার একটা সীমা থাকে। সেটাকে সীমানায় থেমে দেওয়াই ভালো। নচেৎ কষ্ট বাড়ে। আমরা যারা অলিগলি দিয়ে হাঁটি, তাদের গল্পগুলো কিছুটা অন্যরকম। শহরের অলিগলিগুলো অনেকটা নিষ্ঠুর। এখানে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠে । ল্যাম্পপোস্টের আলোয় জোনাকির আলো খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। দু একবার চোখে পড়লেও নিমিষেই হারিয়ে যায় ওরা। ওরা শহরে ক্ষণিকের অতিথি।
দুইঃ-
আমরা যারা গ্রাম থেকে উঠে এসেছি, তাদের গল্পগুলো সাদামাটা। গ্রাম বলতে কাঁচা রাস্তা, বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছোটো নদী, আর মাঠ ভরা সবুজ ধানক্ষেত। একদিন এক শহুরে বন্ধু বলেই বসলো, ইংলিশ মুভি দেখিস? আমার সহজ সরল উত্তর, এখনও দেখা হয়ে ওঠেনি! আমি বুঝতে পেলাম, আমার শহুরে বন্ধু আমার কথায় খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারেনি সেদিন।
তিনঃ-
বন্ধু তামিমের ভ্রমণ শব্দটা বেশ প্রিয়। সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে। তবে কদিন থেকে তার মনটা ভীষণ খারাপ। আমি জিজ্ঞেস করতেই সে বললো, করোনার কারণে অনেক জায়গা দেখতে পারেনি সে। আমি একটা মৃদু হাসি দিয়ে বললাম, ইনশাআল্লাহ! আগামীতে পারবে। তামিমের ইচ্ছেটা আমাদের অনেকের স্বপ্ন!
চারঃ-
অন্তুর সিজিপিএ মন্দ নয়। ৩.৫৫। ওদিন দেখলাম অন্তু মন খারাপ করে নোটিশ বোর্ডের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। আমি একবার নোটিশ বোর্ডে চোখ বুলালাম। একটা কোর্সের কন্টিনিউয়াসের রেজাল্ট হয়েছে। অন্তু ৫০এ ৪৬ পেয়েছে। পাশেই সোহানের হাসিমাখা মুখ দেখে ওর নামটার ঘরে একবার চোখ বুলালাম। সোহান ৫০ এ ৩৪ পেয়েছে!
Leave a Reply