নিজস্ব প্রতিনিধি:
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার কুড়িবিশ্বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক ধর্ষণ চেষ্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৯ জুলাই বুধবার দুপুর ১২ ঘটিকার সময় ম্যানেজিং কমিটির জরুরী বৈঠকে সরজমিনে উপস্থিত থাকাকালীন এমন লৌহমোর্ষক তথ্য মেলে।
সে সময় কুড়িবিশ্বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস রুমে উপস্থিত ছিলেন অতি আলী ইমহাম সরকার সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন বকুল সদস্য লিটন মিয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলাম, সহঃ শিক্ষক বৃন্দ,অভিভাবক মকবুল হোসেন,নাজমুল মিয়া, আব্দুল মতিন,মিলন মিয়া প্রমুখ।
ঘন্টা ব্যাপী চলে ম্যানেজিং কমিটির এ বৈঠক।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন বকুল বলেন ঘটনার পরের দিন লোকমুখে ও সদস্য লিটন এর মাধ্যমে উক্ত ঘটনার খবর শুনতে পাই। জনগণে নানা কথাবার্তা ছড়িয়ে পড়লে ১৯ জুলাই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্য লিটন এর সাথে আলোচনা করে জরুরী বৈঠকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জানা যায় ১৮ই জুলাই বিদ্যালয়ে প্রথমার্ধের ছুটি হওয়ার পর আনুমানিক ১২:২০ মিনিট বিদ্যালয় থেকে বাইরে যান শিক্ষক ফজলুল হক। স্কুলের সামনে বট গাছের নিচে ঝাল মুড়ির দোকানের কাছে দেখা মেলে বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির এক মহিলার। শিক্ষককে দেখে ওই মহিলা সালাম দেয়। পরক্ষণে শিক্ষক ওই মহিলাকে ঝাল মুড়ি খেতে বলে। মহিলা ঝালমুড়ি নিলে পরক্ষণে মহিলার কাছে পান খাওয়ার আবদার করে শিক্ষক ফজলুল হক। পরে মহিলা পান নিতে গেলে পিছন পিছন বাসায় প্রবেশ করেন শিক্ষক ফজলুল হক। বাড়িতে একা পেয়ে শিক্ষক ওই মহিলাকে বিভিন্ন অশ্লীল কথা বলে,এক পর্যায়ে ঐ মহিলাকে জোর করে জড়িয়ে ধরে।তখন ধস্তাধস্তি করে কোনরকমে পালিয়ে ওই মহিলা পাশের বাসায় গিয়ে তার জা কে বিষয়টি জানায়। তখন তার জা উক্ত বিষয়টি বিদ্যালয় এর এক মহিলা শিক্ষকের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষককে অবহিত করেন।ইতিমধ্যে মহিলার স্বামী বাড়িতে আসলে উক্ত বিষয়টি তার স্বামীকে জানায়। এ কথা শুনে তার স্বামী লাঠি নিয়ে ঐ শিক্ষককে স্কুলেই মারতে যান। তখন প্রধান শিক্ষক অনুরোধ করেন ও আশ্বাস দেন যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ওই শিক্ষককে বদলি করা হবে।
উক্ত ম্যানেজিং কমিটির জরুরী বৈঠকে শিক্ষক ফজলুল হক তার সব দোষ স্বীকার করে সবার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।
কমিটির বৈঠকে অভিভাবক ও আরও এক ভুক্তভোগী মিলন জানান, কিছুদিন আগে আমার স্ত্রীকেও এই লম্পট শিক্ষক কুপ্রস্তাব দিয়েছিল। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমার স্ত্রী আমাকে জানালে আমি স্কুলে এসে শিক্ষক ফজলুল হককে জিজ্ঞেস করি। সাথে সাথে সে আমার হাত ধরে মাফ চায়।তাই বিষয়টি বাড়াবাড়ি করিনি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনেছি, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আল ইলহাম সরকার লীমু বলেন, বিষয়টি শোনার পর সহ-সভাপতি বকুল,প্রধান শিক্ষক আতিকুল সহ ৩ জন ওই মহিলার কাছে গিয়েছিলাম। ধর্ষণ চেষ্টা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। অভিযোগ পেলেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গংগাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল হোসেন বলেন, বিষয়টি ঘৃণিত,অভিযোগ পেলেই ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই শিক্ষকের কর্মকাণ্ডে উদ্বিগ্ন ও ক্ষোভ প্রকাশও প্রকাশ করেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।তাদের দাবি শিক্ষক নামের এই কুশিক্ষক কে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
Leave a Reply