স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর
বাতায়ন২৪ডটকমঃ আচরণবিধি মানার মধ্য দিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সমাপ্ত হলো মনোনয়ন পত্র দাখিল কার্যক্রম। মেয়র পদে জাতীয় পার্টি থেকে একক প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলেও আওয়ামীলীগ থেকে মনোননিত প্রার্থী ছাড়াও বিদ্রোহী প্রার্থীও দাখিল করেছেন মনোনয়ন ফরম। এই নির্বাচনে লড়তে ১৩ জন মেয়র পদে ফরম তুললেও জমা দিয়েছে ১০, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭০ জন ফরম তুলে ৬৯ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২০৬ জন মনোনয়ন ফরম তুললেও জমা দিয়েছেন ১৯৮ জন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর জানিয়েছে, মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতিকের মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। জাপার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বহিস্কৃত নেতা আব্দুর রউফ মানিক মনোনয়ন ফরম তুললেও তিনি দাখিল করেন নি। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এছাড়াও মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবু। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে সকাল সাড়ে ১১ টায় তার পক্ষে তার স্ত্রী মনোনয়ন জমা দেন। সেকারণে তিনি প্রত্যাহার না করলে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থেকেই গেলো । অন্যদিকে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক শ্রম সম্পাদক এম এ মজিদ ফরম তুললেও নেত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখে ফরম দাখিল করেন নি।
রিটার্নিং কর্মকর্থার এছাড়াও এই নির্বাচনে লড়তে লড়াই করতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদে শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, জাকের পার্টির মোঃ খোরশেদ আলম, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মান্ডল, স্বতন্ত্র হিসেবে ব্যবসায়ি মেহেদী হাসান বনি, লতিফুর রহমান মিলন ও আবু রায়হান মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ছেন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এছাড়াও জাপার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বহিস্কৃত নেতা আব্দুর রউফ মানিক ও জামায়াতের ইসলামীর সাবেক আমীর মাহবুবার রহমান বেলাল মনোনয়ন ফরম তুললেও জমা দেন নি। গত তিনদিন আগে স্বতন্ত্র হিসেবে মাঠে প্রচারণায় থাকা জামায়াত প্রার্থী দলীয় সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাড়িয়েছেন বলেন জানিয়েছেন দলটির রংপুর মহানগর আমীর এটিএম আজম খান।
অন্যদিকে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পরে ৭০ জন মনোনয়ন পত্র গ্রহন করলেও জমা দিয়েছে ৬৯ জন। আর সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২০৬ জন ক্রয় করলেও জমা দিয়েছে ১৯৮ জন। ৮ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের শেষ দিন। ৯ ডিসেম্বর দেয়া হবে প্রতিক বরাদ্দ। আগামী ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ভোট।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানিয়েছেন, প্রার্থীরা আচরণ বিধি মেনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। আশাকরি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত আচরণবিধি মেনে চলবেন। যাতে আমাদের আইন প্রয়োগ করতে না হয়। আমরা সুষ্ঠু, গ্রহনযোগ্য আইনানুগ ভোটের জন্য যা যা করা দরকার সব করছি। ভোটের আগেই আমরা মাঠে মাঠে ইভিএম নিয়ে যাবো। অসুস্থ্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমরা ইভিএম শেখাবো। কেউ কোন ধরণের বিশৃংখলা তৈরির চেস্টা করলে আমরা তা কঠোরভাবে মোকাবেলা করবো।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন আরও জানান, এবার ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর ১৯৩ টি কেন্দ্র থাকলেও ৩৬ টি বেড়ে এবার কেন্দ্র সংখ্যা হয়েছে ২২৯টি। এছাড়াও এবার স্থায়ী ভোট কক্ষ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৪৯ টি এবং অস্থায়ী ভোট কক্ষ আছে ১৯৩ টি। গত ২০১৭ সালের নির্বাচনের ভোটার সংখ্যার তুলনায় এবার ভোটার বেড়েছে ৩২ হাজার ৫৭৫ জন। গত বছর ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৪ জন ভোটার থাকলেও এবার ভোটার সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জনে। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন এবং মহিলা ২ লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, তৃতীয় বারের মতো এই নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোট। দ্বিতীয় নির্বাচন ২০১৭ সালের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর চেয়ে ১ লাখ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। আর ২০১২ সালে রংপুর সিটি প্রথম মেয়র হয়েছিলেন মরহুম সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু।
বাতায়ন২৪ডটকম/সমামা
Leave a Reply