রিপন শাহরিয়ার। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।বাতায়ন২৪ডটকম।।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ৭ম শ্রেনি পড়ুয়া এক মাদরাসা ছাত্রীকে জোরপূর্বক অসামাজিক কার্যকলাপে বাধ্য এবং তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালের (ছড়িয়ে দেওয়ার) ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৭ই জুন) অভিযুক্ত লেবু মিয়া (৩২) কে গ্রেফতার করেছে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ। সে উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের এমদাদুল মিয়ার (এন্দা)ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজারে অভিযুক্ত লেবু মিয়ার একটি কসমেটিকস (প্রসাধনী) এর দোকান আছে। এবং বাজারের পাশেই একটি প্রাইভেট সেন্টারে পড়াশোনা করতেন স্থানীয় একটি মাদরাসার ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী মেয়ে।
জানা যায়, ১২ বছর বয়সী ওই ছাত্রী প্রায় ৩ মাস আগে প্রাইভেট পড়া শেষে বান্ধবীদের সাথে লেবু মিয়ার কসমেটিকসের দোকানে গেলে দোকানদার লেবুর ওই ছাত্রীর উপর কু-নজর পড়ে। সে সুযোগ বুঝে মেয়েটিকে তার দোকানের ভিতরে ডেকে নিয়ে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেওয়াসহ জোরপূর্বক চুমু খায়, এবং সেই ভিডিও ধারণ করে রাখে কসমেটিকস দোকানদার লেবু। এরপর সেই ভিডিও ভাইরালের (ছড়িয়ে দেওয়ার) ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে আবারও তার দোকানে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এমনকি আবারও ভিডিও ধারণ করে রাখে। এভাবেই ওই কিশোরীকে ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে সে।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৫ই জুন) বিকেলে ওই ছাত্রী প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে লেবু ওই কিশোরীর ভিডিও ডিলেট করার আশ্বাস দিয়ে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেদিন প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টির সুযোগ নিয়ে সারারাতধরে ওই ছাত্রীর উপর নির্মম নির্যাতন চালায় ধর্ষক লেবু।
এদিকে স্বজনরা, মেয়েকে না পেয়ে সারারাত ধরে খুজতে থাকে। বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে খোজাখুজি করেও মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু পরদিন সকালে বিকল্প পথে ওই মাদরাসা ছাত্রীকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয় অভিযুক্ত ধর্ষক লেবু। এরপর নির্যাতনের শিকার শিশুটির কাছে সারারাত কোথায় ছিল জানতে চাইলে মেয়েটি পরিবারের লোকজনকে সবকিছু খুলে বলেন।
এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করেছেন।পরে শনিবার (১৭ই জুন) বিকালে লেবু মিয়াকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার ঐ ছাত্রীর বাবা জানান, “একজন বাবা হয়ে মেয়ের এমন ঘটনা আমার ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে ছোট অবুঝ আমি এর কঠিন বিচার চাই। মামলা করার পর লেবুর লোকজন নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমাদের গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। আমরা গরীব ন্যায্য বিচারের জন্য পুলিশসহ সকলের সহযোগিতা চাই”।
এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, বাবার বয়সী পুরুষ হয়ে মেয়েটির সাথে এহেন কার্যকলাপের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসি চান তারা।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “বিষয়টি জানার সাথে সাথেই লেবু মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মেয়েটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে”।
Leave a Reply