নুরুল হুদা নাহিদ, গঙ্গাচড়া, রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
রংপুরের গংগাচড়ার বেতগাড়িহাটে সরকারি বিধি উপক্ষো করে বিক্রেতার কাছ থেকেও টোল আদায় করছেন ইজারাদার। এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অবহিত থাকলেও অজ্ঞাত কারণে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না তারা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হাট সংশ্লিষ্টরা।
হাট বাজার ইজারার সরকারি শর্ত অনুযায়ী গবাদি পশুসহ অন্যান্য কোন জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র হাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ শুধু ক্রেতার কাছ থেকে রশিদমুলে নির্ধারিত টাকা গ্রহন করতে পারবে। নির্ধারিত মূল্যের বেশি কিংবা বিক্রেতার কাছ থেকে কোন টাকা নিতে পারবেন না। কিন্তু এই আদেশ মানছেন না বেতগাড়িহাট ইজারাদার। এমনকি সরকার নির্ধারিত টোলের তালিকা টানানোর নিয়ম থাকলেও হাটের কোথাও তা পাওয়া যায় নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে এই হাটে বিক্রেতার কাছ থেকেও নেয়া হচ্ছে টাকা। আর ক্রেতার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা। শনিবার হাটে আসা হারাগাছের সারাই এলাকার রশিদ মো্ল্লা নামের এক গরু বিক্রেতা জানান, আমি আব্দূল জলিল নামের এক গ্রাহকের কাছে গরু বিক্রি করেছি ৬৪ হাজার টাকায়। তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা টোল নিয়েছে। আর আমার কাছে নিয়েছে ২৫০ টাকা। ক্রেতাকে রশিদ দিলেও তারা আমাকে কোন রশিদ দেই নি। যদি আমি টাকা না দেই, তাহলে আমাকে হাট থেকে বের হতে দেয় না। কিন্তু আমি শুনছি বিক্রেতার কাছ থেকে টোল নেয়ার নিয়ম নাই।
খলেয়া ইউনিয়ন থেকে আসা ছাগল ক্রেতা শ্রী অভিমণু মন্ডল জানান, আমি রনজিত সাহার নামের এক জনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে একটা ছাগল কিনলাম। আমার কাছ থেকে ইজারাদার রশিদ দিয় ২০০ টাকা নিলো। আর যারকাছ থেকে ছাগল কিনলাম তার কাছ থেকে নিলো ১০০ টাকা। কিন্তু তাকে রশিদ দিলো না। তিনি টাকা না দিতে চাইলে তার সাথে অনেক ক্ষুব্ধ হয়ে মারমুখি হন ইজারাদারের টোল আদায়কারীরা।
হাটের ইজারাদার টোল আদায়কারী দুলাল মিয়া জানান, ইজারাদার আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন “ছাগলের রশিদ বাবদ ক্রেতাকে ২০০ টাকা ও বিক্রেতাকে রশিদ ছাড়া ১০০ টাকা এবং গরুর রশিদ বাবদ ক্রেতাকে ৫০০ টাকা ও বিক্রেতাকে রশিদ ছাড়া ২৫০ টাকা টোল নিতে। আমরা সেভাবেই নিচ্ছি। এটাই এখানকার নিয়ম। এখন যদি সরকারি নিয়ম এটা না থাকে, তাহলে সেটা ইজারাদারের কাছে জানতে চান। আমরা এখানে শুধু টাকা আদায় করি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। আমরা ইজারাদারের নির্দেশ ফলো করি মাত্র।
এ বিষয়ে হাট ইজারাদার আবেদ আলীকে হাটের অফিস রুমে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইলে তার সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব হাটেই ক্রেতা বিক্রেতার কাছ থেকে টোল তোলা হয়। আমিও তুলি।
গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্নার কাছে সরেজমিন তথ্য তুলে ধরা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি এর আগেও জেনেছি।বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনভাবেই ইজারাদারের বিক্রেতার কাছ থেকে এবং নির্ ধারিত দরের বেশি ও রশিদ ছাড়া কোন টোল আদায়ের বিধান নেই। যেসব ইজারাদার এসব করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএনও অফিস এবং বেতগাড়ি হাট ইজারাদার অফিস সূত্র জানায়, সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার বসে বেতগাড়ি হাট। রংপুর ছাড়াও বিভাগ এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে গরু ছাগল ক্রয় বিক্রির জন্য ক্রেতা-বিক্রেতারা আসেন। প্রতি হাটে বিকিকিনি বাবদ ইজারাদার গড়ে ৫ লাখ পর্যন্ত টোল আদায় করেন। এর মধ্যে ৩০ ভাগ টাকাই আদায় করা ঞয় বিক্রেতার কাছ থেকে। যা হাট ইজারার সরকারি নিয়ম বহির্ভূত। বছরের পর বছর এই অনিয়ম হয়ে থাকলেও অজ্ঞাত কারণে এটি বন্ধ হচ্ছে না।
বাতায়ন২৪ডটকম।।সমামা
Leave a Reply