স্টাফ করেসপনডেন্ট, বাতায়ন২৪ডটকম

রংপুরঃ ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে থাকার অভিযোগে রংপুরের পীরগাছায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান ও একজন সহকারি শিক্ষককে চাকরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। অধিদপ্তরটির বিভাগীয় উপ পরিচালক জানিয়েছেন সরকারি চাকরিবিধিমালা লংঘনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোজাহিদুল ইসলাম বুলেট জানান, সাময়িকভাবে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আফতাব উদ্দিন হাসিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারী জুলফিকার এবং একই ইউনিয়নের আলহাজ আব্দুল হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলতাব হোসেন। এর মধ্যে আলতাব হোসেন ছাওলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং আব্দুল বারী জুলফিকার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি চাকরি বিধামালা ১৯৭৯ সালের ২৩ ও ২৫(১) ধারা লংঘনের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুই শিক্ষক সরকারি চাকরিতে কর্মরত থেকে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ করেন এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে আসছেন, যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা লঙ্ঘন ১৯৭৯-এর ২৩ ধারা এবং ২৫(১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি জানান, ২৩ ধারায় বলা আছে, সরকারি কর্মচারী নিজ নামে প্রকাশিত কোনো লেখায় বা তার কর্তৃক জনসমক্ষে প্রদত্ত বক্তব্যের অথবা বেতার-টেলিভিশনে সম্প্রচারে কোনো বক্তব্য এমন কোনো বিবৃতি বা মতামত প্রকাশ করতে পারবেন না, যা সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে পারে।

তিনি আরও জানান, ২৫ ধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে বা কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ ভাবি দেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বা কোনো প্রকারেই সহযোগিতা করতে পারবেন না।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত ২৩ অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে তাদের বিরুদ্ধে বরখাস্তের চিঠি ইস্যু হয়। দিই শিক্ষক চিঠি গ্রহনও করেছেন।

বরখাস্ত হওয়া দুই শিক্ষক আলতাব হোসেন ও আব্দুল বারী জুলফিকার জানান, তারা রাজনীতির সব পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তবে শিক্ষা অফিসে অব্যাহতির কোনো কাগজ এখনো জমা দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ রংপুরের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা আওয়ামীলীগের অনেক পদ পদবী বহন করছে এবং প্রকাশ্যে দলীয় কর্মকান্ডে অংশ গ্রহন করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া না হলেও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা হওয়ায় দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করার বিষয়টি অমানবিক এবং সরকারের ফাসিবাদি কর্মকান্ডের বহিপ্রকাশ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বরখাস্ত তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। যেহেতু তারা পদ থেকে আগেই অব্যাহতি নিয়েছেন সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের আদেশ মানবাধিকার লংঘনেরও শামিল।

বাতায়ন২৪ডটকম/সমামা