মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
স্বাধীনতা বিরোধীরা আশেপাশে আছে, আমাদের সাথে আছে, মিলেমিশে আছে, সুযোগ পেলেই স্ব-মুর্তিতে আবির্ভূত হবে: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী তিস্তায় নিখোঁজের ১৮ দিন পর সন্ধান মিললো নাইসের লাশের  রংপুরে গাছের ডাল পড়ে মারা গেলেন ১০ বছরের কন্যাসহ শিক্ষিকা, স্বামী আহত র‌্যাব-১৩ মাদক বিরোধী অভিযানঃ ৮১ কেজি গাজা ও ১১৪৫ বোতল ফেন্সিডিল জব্দ, গ্রেফতার ৪ অবৈধভাবে স্যালাইন মজুদ: রংপুরের অবসর ও রিফাত মেডিসিন কর্নারকে জরিমানা সরকারকে সরাতে তারাতারি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করা হবে: আলাল   সাময়িক বরখাস্ত এডিসি হারুন রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরির দায়ে দুই কর্মচারীর ২ বছর করে কারাদন্ড পীরগঞ্জে ৩২ হাজার কেজি সরকারি চাল জব্দঃ ৩ কালোবাজারির নামে মামলা যানজট নিরসনে রংপুর মহানগরীতে চালু হলো ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেম  
বাইকারকে টিএসআইয়ের মারধর-গালিগালাজ নিয়ে তুলকালাম

বাইকারকে টিএসআইয়ের মারধর-গালিগালাজ নিয়ে তুলকালাম

স্টাফ করেসপনডেন্ট, বাতায়ন২৪ডটকম
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হাসান আল মামুন নামের এক বাইকারকে মারধোর করে ঠোট, নাক মুখ ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে বিষয়টি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে অভিভাবকের কাছে ক্ষমা চেয়ে ঘটনার সমঝোতা ছাড়াও অভিযুক্ত একজন টিএসআইকে পুলিশে লাইনে ক্লোজড এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন বলছে, নগরীতে ট্রাফিক পুলিশের নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণহীন। দিনরাত বাইক আটকানো ও মামলার দিকে তারা মনোযোগি হলেও যানজট নিরসনে তাদের কোন নজর থাকে না।

ঘটনার শিকার যুবক রংপুর মহানগরীর নগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ রোডের এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমেদের পুত্র। মূলত সেনা কর্মকর্তা এবং বীরমুক্তিযোদ্ধার পুত্র পরিচয় দেয়ার পরই তার ওপর চড়াও হয় দুই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা।

ঘটনার শিকার হাসান আল মামুন জানান, ‘আমি বুধবার ( ২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর কৈলাশরঞ্জণ স্কুল মোড় সংলগ্ন আজাদ হোমিও হলের সামনে মোটরসাইল রেখে ভেতরে ওষুধ কিনতে যাই। ওষুধ নেওয়া শেষে বাইকের কাছে আসা মাত্রই টিএসআই সজল কুমার ও শফিকুল ইসলাম আমার কাছে বাইকের কাগজপত্র দেখতে চান। আমি তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখাই। এরপর তারা আমাকে বলেন, আপনি রাস্তায় মোটরসাইকেল রেখে
চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগ মামলা দেয়া হবে।

মামুন জানান, ‘মামলার বিষয়টি বললে আমি তাদেরকে বলি এ ধরণের কাজ আমি আর কখনও করবো না, সতর্ক থাকবো। এসময় আমি নিজেেেক আমার পিতা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বীরমুক্তিযোদ্ধা মনুসর আহমেদের পরিচয় দেই। দেয়া মাত্রই টিএসআই সজল এবং শফিকুল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি গালিগালাজ শুনে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে টিএসআই সজল আমার ঠোঁটে, নাকে মুখে ঘুসি মারতে থাকেন। এতে আমার ঠোঁট ও নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে এবং রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পরে যাই। স্থানীয়রা আমাকে রাস্তা থেকে তোলেন। এসময় টিএসআই শফিকুলও আমাকে মারধোর করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সামসুল ইসলাম জানান, এভাবে প্রকাশ্যে এক যুবককে ট্র্রাফিক পুলিশের মারধোর এবং গালিগালাজ দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয়রা। তারা ওই দুই পুলিশকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। মুহুর্তেই সগকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশে থাকা অন্যান্য ট্রাফিক সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। দেড়ঘন্টাপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ট্রাফিক পুলিশ সজল ও মামুনকে সেখান থেকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা সেখানেও জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এরইমধ্যে খবর পেয়ে ছুটে আসেন মামুনের পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমেদ।

পরে ডিবি কার্যালয়ে ঘটনার শিকার মামুন, তার পিতা মনসুর, অভিযুক্ত টিএসআই সজল ও শফিকুলসহ মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) মিনহাজুল আবেদীনের নেতৃত্বে সমঝোতা বৈঠক হয়। সেখানে মামুন এবং তার পিতার কাছে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে ঘটনার সমঝোতা হয়।

মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান জানান, মামুনসহ অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বসেছিলেন। মামুনের বাবাকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে এনে পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসি ট্রাফিক মেনহাজুল আলম জানান, ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে কথা কাটাকাটি ও মারধোরের ঘটনা ঘটেছে। সমাধানও হয়ে গেছে।’

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত পিএসআই সজলকে ডিউটি থেকে প্রত্যাহার করে লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। যেহেতু তিনি একজন পরিদর্শক সেহেতু তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তওে পাঠানো হবে। এরপরই নির্দেশনার আলোকে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, অন্যায় করে কেউ ছাড় পাবেন না।

রংপুর মহানগর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন। সুজনের রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু জানান, রংপুর মহানগরীর জাহাজ কোম্পানী মোড়, পায়রা চত্বর, সুপার মার্কেট মোড়, সিচি বাজার, কাচারি বাজার এবং কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অসহনীয় যানজট লেগেই আছে। এসব জায়গায় আমরা দেখতে পাই ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু তারা যানজট নিরসনে নজর দেন না। বরং তাদের আমরা সব সময় দেখি বাইকসহ যানবাহন আটকিয়ে মামলা দিতে, কথাকাটাকটি করতে। এছাড়াও সেখানে কি হয় সেটা তারাই ভালো জানেন। এরমাধ্যমে আমরা যেটা মনে করছি, সেটা হলো মহানগর ট্রাফিক বিভাগের চেইন অব কমান্ড নেই। ট্রাফিক বিভাগের এই অব্যবস্থানা মেট্রোপলিন শুরুর পর থেকেই আমরা লক্ষ করছি। এসব নিয়ে কথাও বলা হচ্ছে বিভিন্ন সেক্টর থেকে। কিন্ত কোন কাজ হচ্ছে না।

 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com