স্টাফ করসপন্ডেন্ট
রংপুরের বদরগঞ্জে এক প্রধান শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ,ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আবারও যোগদান করার পায়তারা করছে।বিষয়টি বুঝতে পেরে বিদ্যালয়ের মাঠে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত দাবিতে বুধবার (১৬ ই আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে।
ওই শিক্ষকের নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি উপজেলার চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, গত ১৬ই জুন এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়া বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন অভিভাবকসহ স্থানীয় মানুষ। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে তাঁরা বিদ্যালয়ে তালাও ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের পর অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে তাঁর কক্ষে ডেকে শিক্ষাসামগ্রী ও জামাকাপড় কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানি করেন এবং এ কথা কাউকে বললে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করানোর হুমকি দেন। মাঝেমধ্যে সবার আগে ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে যেতে বলতেন। এ সময় কক্ষে ডেকে নিয়ে একই কায়দায় শ্লীলতাহানি করতেন। ১০ জুন অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীর বাবার মুঠোফোনে কল করে ওই ছাত্রীকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেন। ছাত্রী তা মুঠোফোনে রেকর্ড করে স্বজনদের জানান।
পরের দিন সকালে এলাকাবাসী ও অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন রাতেই প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক কে গ্রেফতার করে বদরগঞ্জ থানা পুলিশ। পরের দিন সকালে রংপুর জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন পুলিশ।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি একের পর এক দুষ্কর্ম করেও পার পেয়ে যান। কিছুদিন আগে এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠান। জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় বিদ্যালয় যোগদানের চেষ্টা করছে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক।বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষায় দ্রুত আব্দুর রাজ্জাক কে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবি করেন বক্তারা। মানববন্ধনে স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক ডালিম, গনেশ, অমল, জয়নাল আবেদীন, যোগেশ, কাজল, দুলাল, প্রমুখ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে মোবাইল ফোনে এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক। ওই ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় ছাত্রীর বাবা মামলা করেন। পরে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে আব্দুর রাজ্জাক সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ পরে আর তাঁকে স্থায়ী বরখাস্তের উদ্যোগ নেয়নি। এ অবস্থায় সম্প্রতি তিনি বিদ্যালয়ে আবারো যোগদানের চেষ্টা করেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা বিষয়টি জানতে পেরে মানববন্ধন করছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। বিষয়টি এখন আদালত দেখবে।
Leave a Reply