রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর বাড্ডা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মূলহোতা আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামান রয়েলসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ । ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ পাবলিক পরীক্ষা আইনে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক শামীম আহম্মেদ ।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজধানীর বাড্ডা থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রনপ কুমার বিশ্বাস ।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দুইটি গৃহীত করেন । এরপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি বিচারের জন্য সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয় । অপরদিকে পাবলিক পরীক্ষা আইনের মামলার চার্জশিটটি বিচারের জন্য বদলির আদেশ দেন আদালত ।
চার্জশিট ভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- জনতা ব্যাংকের গুলশান শাখার কর্মকর্তা শামসুল হক শ্যামল (৩৪), আব্দুল্লাহ আল জাবের, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন) দেলোয়ার হোসেন (৩১), রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার জানে-আলম মিলন (৩০), পূবালী ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী রবিউল আউয়াল, পারভেজ মিয়া, মিজানুর রহমান মিজান, মোবিন উদ্দিন ও সোহেল রানা, পরীক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম স্বপন, রাশেদ আহম্মেদ বাবুল, জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ ও রবিউল ইসলাম রবি ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাঁচটি ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) পদে এক হাজার ৫১১ জন জনকে নিয়োগ দিতে ৬ নভেম্বর বিকেলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় । বিকেল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন কেন্দ্রে এমসিকিউ পদ্ধতিতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় । বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও পরীক্ষা সম্পাদনের দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ।
মামলার সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর রাতে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হবে এমন তথ্য আসে ডিবির কাছে । ডিবির টিমের সদস্যরা ছদ্মবেশে পরীক্ষার্থী সেজে ৬ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে প্রশ্নপত্রসহ উত্তর পাওয়ার জন্য চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । অগ্রিম টাকা পরিশোধের পর প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসচক্রের অন্যতম হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপন ডিবির ছদ্মবেশী পরীক্ষার্থীকে নিয়ে যান । এরপর পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ স্বপনকে হাতেনাতে আটক করা হয় ।
২০২১ সালের ৬ নভেম্বর পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সঙ্গে সকালে পাওয়া প্রশ্ন ও উত্তর হুবহু মিলে গেলে স্বপনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের সাভার শাখার শ্রীনগর থেকে জানে-আলম মিলনকে গ্রেফতার করা হয় । জানে-আলম মিলনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র সরবরাহকারী শামসুল হক শ্যামলকে ধরতে প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান চালানো হয় । পরে জানা যায় শ্যামল ঢাকায় অবস্থান করছেন । এরপর ঢাকার দক্ষিণ বাড্ডা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় ।
বাতায়ন২৪ডটকম/আশা
Leave a Reply