স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর। বাতায়ন২৪ডটকম।।।
`নির্বাচন কমিশনসহ সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধংসপ্রাপ্ত এবং সরকার সব কুক্ষিগত করে রাখায় জনগন নির্বাচন বিমূখ, দেশে এথন বিরাজনীতিকরণ চলছে, স্বাধীনতার মূল চেতনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সেকারণে জোড় গলায় দাবি করার সুযোগ নেই বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের দেশ’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপ-নেতা জিএম কাদের এমপি।
বৃহস্পতিবার ( ২ মার্চ) দুপুরে রংপুর মহানগরীর পল্লীনিবাসে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।এসময় তার সাথে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর,কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, জেলা সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম আহবায়ক শাফিউল ইসলাম শাফি, মহানগর সিনিয়র সহ সভাপতি লোকমান হোসেন, জাহিদুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘ বর্তমানে নির্বাচনগুলোতে সাধারণ মানুষের আস্থা প্রাকটিক্যালি নেই বললেই চলে। আমি যতটুকু দেখেছি, নির্বাচন সঠিকভাবে বা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে, জনমতের প্রতিফলন হচ্ছে, এটা বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করে না। যার জন্য আজকাল নির্বাচনে আসতে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা অনিহা দেখা যাচ্ছে। এটা বিরাজনীতিকরণের মতো হয়ে যাচ্ছে ‘
জিএম কাদের বলেন, ‘ জনগন সকল ক্ষমতার উৎস, রাষ্ট্রীয় কাজ সব তাদের ইচ্ছেমতো হবে এটি হলো আমাদের দেশের প্রজাতন্ত্র বা গণতন্ত্র। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিনিধি তৈরি করবো। সেই প্রতিনিধি আমার কথা মতো চলবে, না চললে নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন করবো। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচন ব্যবস্থায় এই ব্যাপারটিতে কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। যার কারণে জনগন নির্বাচন বিমুখ হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে রাজনীতি বিমুখ হয়েছে। এখন দেশে বিরাজনীতিকরণ চলছে, এটা আমাদের দেশের জন্য কখনই মঙ্গলজনক নয় ‘
জিএম কাদের বলেন, ‘ দেশের মালিক যে জনগন, এটা যে প্রজাতন্ত্র, যার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল। এই স্বাধীনতা যুদ্ধের যে মূল চেতনা, যার জন্য দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল। দেশের মালিক হবে জনগন। এটা আমার মনে হয় সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। সঠিক নির্বাচন যতদিন না হয় ততদিন এটা যে একটা প্রজাতন্ত্র সেটা জোড় গলায় কেউ দাবি করতে পারি না ‘
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার সর্বাত্বকভাবে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সংবিধানের সাথে ভারতের সংবিধানের মিল আছে। ভারতে এই সংবিধান মেনেই সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে এই সংবিধান মেনে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে না। যেহেতু নির্বাচন সংক্রান্ত সকল জবাবদিহীতামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘সার্বিকভাবে রাস্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠান এখন প্রায় ধ্বংস প্রাপ্ত এবং সরকার সব কিছু নিজের কুক্ষিগত করে রেখেছে। সেই প্রেক্ষিতে যেকোন নির্বাচন যদি এভাবে হয় সরকার যখন পক্ষ হয়, তখন সেটা অবাধ নিরপেক্ষ হয় না। সরকারের পক্ষপাতিত্ব দেখা যায়। সরকারি কর্মকর্তারা, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, আইনশৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনী এরা সরাসরি সরকার দলীয় মানুষ হিসেবে কাজ করে। সেই প্রেক্ষিতে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা এই সরকারের অধীনে নেই। লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড হওযারও সম্ভাবনা নেই। আমরা মনে করি এটার বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। সদিচ্ছা থাকতে হবে এবং সবাইকে মিলে সমাধান বের করতে হবে। ’
আর আগে তিনি এরশাদের মাজার জিয়ারত, সুরা ফাতিহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেন। পরে তিনি লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে রংপুর ত্যাগ করেন। ৫ দিনের সফরে বুধবার রাত সাড়ে সাত টায় রংপুর আসেন জিএম কাদের।
বাতায়ন২৪ডটকম।। সমামা
Leave a Reply