স্টাফ করেসপডনডেন্ট, রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
রংপুরের পীরগঞ্জে ফরহাদ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ধর্ষনের পর পরিবার পরিজন মিলে মারধোরের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর অসুস্থ্য মেয়েটিকে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ৩ টায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
মহিলা অধিদপ্তর পরিচালিত রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার ওসিসিতে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগি ওই ছাত্রী জানান, পীরগঞে।জ উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের সাহাপুর গ্র্রামের ফারুক মিয়ার পুত্র ফরহাদ হোসেনের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে সে বিয়ের কথা বলে আমাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে। আমি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে আমাকে পালিয়ে নিয়ে ঢাকায় যায়। সেখানে গিয়ে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে আমরো স্বামী স্ত্রী হিসেবে বসবাস করি।
ভূক্তভোগি ওই ছাত্রী আরও জানান, গত সোমবার ( ২৭ মার্চ) ফরহাদের পিতা ফারুক সাহেবসহ কয়েকজন লোক মাইক্রো নিয়ে আমাদের ভাড়া বাসা থেকে নিয়ে আসে। আসার সময় বলে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিবে।কিন্তু পীরগঞ্জ স্ট্যান্ডে আসা মাত্রই তিনি মাইক্রো থেকে আমাকে নামিয়ে নিয়ে সিএনজিতে করে আমার বাড়িতে রেখে যান এবং ফরহাদকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরের দিন ফরহাদ আমাকে ডাকলে আমি বেলা ১১ টায় তার বাড়িতে যাওয়া মাত্রই ফরহাদ ও তার পরিবারের লোকজন আমাকে খারাপ মেয়ে বলে মারধোর করে। এক পর্যায়ে আমার গলায় ওড়না পেচিয়ে আমাকে মেরে ফেলার চেস্টা করে। আমার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন দৌড়ে আসে। এরপর সেখানে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা আসেন। পরে সেখান থেকে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি করায়।
ভূক্তভোগি ছাত্রী জানান, ঢাকায় রোববারও ( ২৬ মার্চ) ফরহাদ আমাকে ধর্ষন করেছে। আমি আমার সব কিছু তাকে দিয়েছি। বিশ্বাস করে, তার স্ত্রী হবো বলে। কিন্তু সে এখন আমাকে বিয়ে করছে না। আমার কি হবে। আমাকে এখন কে বিয়ে করবে। আমার পড়াশুনা কিভাবে হবে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
ভুক্তভোগি মেয়ের মা রাহিমা বেগম জানান, আমার স্বামী ভাংরি ব্যবসায়ী। ফরহাদ আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। ওর বিচার চাই আমি।
ভুক্তভোগির পিতা সুলতান মিয়া জানান, ফরহাদ যখন আমার মেয়েকে পালিয়ে ঢাকা নিয়ে গেলো। তখন আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান বাবলু মিয়াকে বিচার দেই। তিনি ফরহাদদের বাড়িতে এসে বৈঠক করে তার পিতা ফারুক মিয়াকে নির্দেশ দেন ছেলে মেয়েকে খুঁজে এনে বিয়ে দিতে। সেই অনুযায়ী ফারুক মিয়া ঢাকা থেকে ছেলে মেয়েকে নিয়ে আসলো। ফরহাদ আমার মেয়েকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে গেলো। কিন্তু তারা বিয়ে না দিয়ে আমার মেয়েকে মারধোর করলো। গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যার চেস্টা করলো। আমার মেয়ে এখন হাসপাতালে মরণাপন্ন। এখন আমার মেয়ের কি হবে। আমি গরীব মানুষ। কোথায় বিচার পাবো আমি।
ভুক্তভোগি মেয়ের মামা মহুবার রহমান জানান, আমরা গরীব মানুষ। এই মেয়েকে এখন কে বিয়ে করবো। ফরহাদ বিয়ের কথা বলে তাকে ধর্ষণ করলো। এখন বিয়ে না করে উল্টো তার পরিবার তাকে হত্যা চেস্টা করলো। আমরা এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান বা্বলু মিয়া জানান, আমি জানা মাত্রই ছেলের বাবাকে ছেলে নিয়ে এসে বিয়ে দেয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু তারা ছেলে মেয়েকে এনে বিয়ে না দিয়ে উল্টো মেয়েকে মেরেছে। এটা কাম্য নয়। এখন মেয়ে হাসপাতালে। আইনগতভাবে সুরাহা হওয়া উচিৎ। যাতে কোন ছেলে কোন মেয়ের জীবন নস্ট করতে না পারে।
পীরগঞ্জ থানার ওসি জাকির হোসেন জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ৩ টায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসার পর তার ভেজাইনাল সওয়াব সংগ্রহসহ বিভিন্ন ডাক্টারী পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন মেয়েটিকে ওসিসিতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি শোনার সাথে সাথেই হাসপাতালে অফিসার পাঠিয়েছি। এছাড়াও মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাতায়ন২৪ডটকম।।সমামা
Leave a Reply