হাবিবুর রহমান।।চিলমারী,কুড়িগ্রাম।।বাতায়ন২৪ডটকম।।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় এক গৃহবধূকে কুপিয়ে গুরুতর জখম ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশির বিরুদ্ধে ।
আহত সাহেরা বেগম উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মতিয়ার রহমানের স্ত্রী ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সাহেরা বেগমের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী ফেরদৌসের পরিবারের পারিবারিক দ্বন্দ চলে আসছে ।
এরই জের ধরে গত ১৬ নভেম্বর ( বুধবার ) বিকেলে মতিয়ার রহমানের গরু ফেরদৌসের বাসায় গেলে, ফেরদৌসের স্ত্রী মর্জিনা বেগম, সাহেরা বেগম কে অকথ্য গালি-গালাজ করতে থাকেন ।
সাহেরা বেগম তাদের গালি-গালাজ করতে নিষেধ করলে, তিনি ( মর্জিনা বেগম ) উত্তেজিত হয়ে দলবল নিয়ে লাঠি,দা,ছোরা, বটি, বেকি,রড় সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাহেরা বেগমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে চৌচালা টিনের একটি ঘর ভাংচুর করেন ।
এ সময় সাহেরা বেগম তাদেরকে বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তার উপর হামলা চালায় । এতে সাহেরা বেগমের বাম পা গুরুতর জখম হয় ও মুখে লোহার রডের আঘাতে ৩টি দাঁত ভেঙ্গে যায় ।
এক পর্যায়ে তারা সাহেরা বেগমের স্বর্ণালংকার খুলে নেয় ও পরিধানের কাপড় টেনে-হিঁচড়ে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ঘটায় ।
সাহেরা বেগমের মেয়ে মিতু আক্তার বলেন, আমাদের গরুর বাছুর ফেরদৌস (পানাতির) বাড়ীতে গেলে, তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম আমাদেরকে খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকেন এবং তার ছেলে তারেক কে দা নিয়ে আসতে বলেন । তখন আমরা ভয়ে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেই । পরে তারেক দরজা ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে, আমার মায়ের হাত ও মুখ চেপে ধরে আর ওবায়দুল মায়ের পায়ে দা দিয়ে কোপাতে থাকে । কোপানোর পর তারেক মায়ের পড়নের কাপড় ছিড়ে ফেলে । এসময় আমি এগিয়ে গেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় তারেক । পরে এলাকাবাসীরা এসে মাকে চিলমারী হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন ।
হামলার বিষয়ে ফেরদৌস পানাতির স্ত্রী অভিযুক্ত মর্জিনা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাহেরার গরুর বাছুর প্রায় দিন আমাদের ক্ষতি করে। সেদিন ও আমাদের বাসায় এসে ক্ষতি করে । তাদেরকে বিষয়টি বলায় মিতু ও তার মা আমাকে অনেক খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ করে এবং বাড়িতে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
কুপিয়ে জখম করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমকে যখন মিতু ও তার মা গালি দিচ্ছিল তখন আমার ছেলে তারেক দা দিয়ে সাহেরার পায়ে চোট মেরেছে ।
এ বিষয়ে ওয়ার্ড মেম্বার রায়হানুল ইসলাম বিজু বলেন, ঘটনার সময় আমি কেডি ওয়ারী স্কুলের পাশে ছিলাম । একজন এসে জানালেন মারামারি লেগেছে, তখন আমি এসে দেখি আহত সাহেরা বেগমের পা ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে । সাথে সাথে আমি তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন থেকে দুই পরিবারের দন্দ চলে আসছে । এর আগেও ফেরদৌস পানাতি পরিবারের সাথে সাহেরা বেগমের ঝামেলা হয়েছিল ।
এ ঘটনায় চিলমারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে । মামলা নং- ৩, তারিখ-১৯-১১-২০২২।
চিলমারী মডেল থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে । মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সুষ্ঠভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছি ।
বাতায়ন২৪ডটকম/হার/আশা
Leave a Reply