স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার উত্তর খলেয়া পন্ডিত পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিমল কুমার সরকারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারীতা ও অর্থ আত্মসাৎ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে অভিযোগ করেন মনিরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গংগাচড়া উপজেলাধীন খলেয়া ইউনিয়নের উত্তর খলেয়া পন্ডিত পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯১ ইং সালে বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্থাপিত হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টিতে আধিপত্য বিস্তার করে নিজের ইচ্ছামতো বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে নিজ পরিবারের সদস্যদের দ্বারা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন ও সভাপতি নির্বাচন করে ।বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের অর্থ আত্মাসাৎ করে যাচ্ছেন নির্বিগ্নে। যার প্রমাণ ২০২১-২০২২ ইং অর্থ বছরের পিইডিপি অর্থ এবং স্লিপ ও প্রাক-প্রাথমিকের সম্পূর্ণ অর্থ কাজ না করে ডাবলিং ভাউচার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যার ফলে বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বিধি বর্হিভূত হয়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রমাণ স্বরূপ ২০২১-২০২২ ইং শিক্ষাবর্ষের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সালমান রোল: ১৫, প্রধান শিক্ষকের ছেলে ২০১৫ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে জ্যোতিময় সরকার (জয়) রোল- ১১ আবার ২০১৬ সালে চতুর্থ শ্রেণিতে জয় সরকার নামে রোল-১৮ উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাৎ করেছিল।
এমনকি তিনি অফিস কক্ষে নিজ টেবিলে প্রায় নির্বিঘ্নে ঘুমিয়ে থাকেন এবং কখনো অর্ধ নগ্ন শরীরে অফিসে বসে থাকেন। তাছাড়া নিজেই তার গরু স্কুল মাঠে বিচড়ন করার মাধ্যমে বেঁধে ঘাস খাওয়ান। ২০২০-২০২১ ইং সালের অফিসের টিনের শেড বাড়িতে নিয়ে যায়। স্কুলের ল্যাপটপ স্থায়ীয় ভাবে বাড়িতে ব্যবহার করে এবং স্কুল মাঠে ধান শুকায় স্কুল কক্ষে ধানের বস্তা ও নেট রেখে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়টির শিক্ষার গুণগত মান নষ্ট হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, স্কুল এর বেহাল দশা। স্কুল ছাদের প্লাস্টার খুলে মেঝেতে পড়েছে। স্কুল এর টেবিল বেঞ্চ এর কাঠ খুলে দরজা বানানো হয়েছে। স্কুল রুমে পুরাতন ইট রাখা হয়েছে। স্কুল এর টিন শিড তার বাসায় নিয়ে গিয়ে বাসার সামনে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। উপস্থিত শিক্ষকরা বলেন, ১-০৩-২০১৯ তারিখে আই সিটি ট্রেনিং করেন দীপক কুমার সরকার এবং ৩ মাসের মধ্যে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর দেয় । কিন্তু প্রধান শিক্ষক তা তার পারিবারিক কাজে ব্যবহার করেন।প্রাক প্রাথমিক এর নির্দেশিকা কাটি আনার কথা বললে প্রধান শিক্ষক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন অঞ্জলী রানী নামে এক শিক্ষিকাকে।
শিক্ষক দীপক কুমার সরকার বলেন, কোন জাতীয় প্রোগ্রাম হয় না।কোন মা সমাবেশ ও হয় না।
এ বিষয়ে পরিমল কুমার সরকার বলেন, তিনি অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়ে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন কিছু সময়ে আমি টেবিলে মাথা রেখে ঝিমিয়ে থাকি । আকাশ খারাপ থাকার কারণে স্কুল ঘড়ে ধানের বস্তা রাখি। অর্ধ নগ্ন হয়ে অফিসে থাকা আমার ভুল হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাগমা সিলভিয়া বলেন , তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।এ বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply