স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর।। বাতায়ন২৪ডটকম।।
কালবৈশাখী ঝড়ে রংপুরের পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের দুই সহস্রাধিক বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। লাখ লাখ গাছপালা উপড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুটি উপড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছ উপড়ে পড়ায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের সাথে চারঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ঝড় আম, ভুট্টা, গম, ধান, কলাসহ উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার (১৫ মে) রাত সাড়ে দশটার পর থেকে থেমে থেমে রাত ১ পর্যন্ত কালবৈশাখী ছোবল মেরেছিল এখানে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপণে কাজ করছে।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন জানান, কালবৈশাখীতে উপজেলার পারুল, তাম্বুলপুর এবং ইটাকুমারী ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ব্যপক। এছাড়াও তাম্বুলপুর, ছাওলা ও সদর ইউনিয়ন লন্ডভন্ড হয়েগেছে। তিনি জানান, এই ছয় উপজেলায় দেড় হাজারেও বেশি বাড়িঘর দুমুড়ে মুচড়ে গেছে।মানুষ জনকে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হবে রাতে।রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাটে শেকড়সহ হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। সকাল থেকে সেসব গাছ অপসারণের কাজ করছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস। এছাড়াও খুটি উপড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিকেলে দিকে শুধুমাত্র পীরগাছা সদর ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহর দেয়া গেছে।
ইউএনও জানান, পারুল, শরীফ সুন্দরসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। মানুষ জন ভীষন কস্টে পড়েছে। তাদের রাতে থাকতে হবে খোলা আকাশের নীচে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বাড়ি ঘর ধরে ধরে তালিকা করছি। একটি তালিকা ডিসি অফিসে পাঠানো হয়েছে। সার্বিকভাবে বুধবার ( ১৭ মে) সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতা শুরু হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজন ও এলাকাবাসি সহযোগিতায় এই দুর্যোগে সবাই মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ করছেন।ইউএনও সুমন আরও জানান, কালবৈশাখীতে ৪ জন বিভিন্ন বয়সি মানুষ আহত হয়েছিলেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তারা এখন ভালো আছেন।
এদিকে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা তারিন এ প্রতিবেদককে জানান, কলবৈশাখীতে শহীদবাগ, কুর্শা, টেপামধুপুর, বালাপাড়া , সারাই ও হারাগাছ ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এরমধ্যে চর এলাকায় ক্ষতির পরিমান বেশি। খুটি উপড়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় তালিকা তৈরি করতে বিলম্ব হচ্ছে। আমরা ছবিসিহ বাড়িঘরের তালিকা নিচ্ছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন মাছে আছেন, তালিকা করছেন। বুধবার (১৭ মে) তালিকা ফাইনাল করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের হিসাব দেয়া যাবে। তবে ক্ষতি অনেক হয়েছে এটা বলতে পারেন।
২৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পরিদর্শন করেছেন উল্লেখ করে ইউএনও তারিন বলেন, শহীদবাগ ইউনিয়নে একটি পিলার পড়ে একজন নারীর মাথা ফেটে গেছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তালিকা হওয়া মাত্রই আমরা সরকারি সহযোগিতা পৌছে যাবে।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ জানান, ঝড়ের কারণে শুধু যে বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়েছে তা নয়, বোরো, আম কলা, ভুট্রা আবাদের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এসব ফসল কৃষকরা ঘরে তুলছেন।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন সন্ধায় এই প্রতিবেদককে জানান, মাঠে কৃষি বিভাগ ক্ষতির তালিকা তৈরি করছেন। পাশাপাশি নুইয়ে পড়া এবং ঝড়ে পড়া ফসলগুলো কিভাবে ঘরে তুলবেন সেজন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন।
রংপুরের ডিসি ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা হওয়া মাত্রই তাদের জন্য সরকারি সকল সযোগিতা দেয়া হবে। তিনি ক্ষতিগ্রস্তগ্রামগুলোর আশেপাশে যারা আছেন তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে পাশে থাকার আহবান জানিয়েছেন।
বাতায়ন২৪ডটকম।।সমামা
Leave a Reply