কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের কাকিনা-মহিপুর শেখ হাসিনা সেতু সংযোগ সড়কের চাঁদাবাজি ও ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধের পর দাবী মেনে নিলে অবরোধ তুলে নিয়েছেন থ্রি হুইল শ্রমিকরা।
অবরোধে রংপুর থেকে আসা বুড়িমারী, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা,লালমনিরহাট শহরের শত শত যাত্রী অটোরিকশা ও সিএনজি না পেয়ে পায়ে হেঁটে আসতে দেখা গেছে। অনেকে সঠিক সময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা-রংপুর বাইপাস সড়কে দুই ঘন্টা ব্যাপী সড়ক অবরোধ করেন থ্রি হুইলার ও অটো শ্রমিকরা।
দুপুর ২টায় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহির ইমাম সড়কের চাঁদাবাজি ও ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত হাবিবুর রহমান, কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহির তাহু, কালীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শাহা সুলতান নাসির উদ্দিন, কালীগঞ্জ থ্রি হুইলার এলপিজি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হযরত আলী, সম্পাদক নুর নবী ইসলাম, এ সংগঠনটির হাতীবান্ধা শাখার সভাপতি বাবলু ও সম্পাদক রিন্টু মিয়া।
জানা গেছে, লালমনিরহাটের সঙ্গে রংপুর শহরের যোগাযোগ সহজ করতে কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা মহিপুর হয়ে শেখ হাসিনার তিস্তা সেতু দিয়ে খুব সহজে রংপুর শহরে প্রবেশ করা যায়। এই সড়কটি গত বন্যায় ভেঙে গেলে রংপুর এর সাথে দুই জেলার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে।
তিস্তা সেতু হয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে সড়কটির সিরাজুল মার্কেট এলাকায় বেড়িকেট নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
পরে হঠাৎ গত ১১ জানুয়ারি গংঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুর বেরিকেট তুলে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর। এরপর থেকে এ সেতু হয়ে পারাপার করছে ভারী সব যানবাহন। টোল ফ্রি ও পথ কমে আসায় বুড়িমারী স্থলবন্দর হতে রংপুরগামী সব ভারী যানবাহন এ পথে যাতায়াত শুরু করে। বেড়িকেট খুলে দেওয়ার পাঁচ দিনেই এ সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যেতে শুরু করেছে। সেতুসহ সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
এদিকে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে এ সড়কে পুনরায় বেডিকেট দিয়ে ভারী যানবাহন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় শ্রমিকরা। থ্রি হুইলার এলপিজি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন করেন স্থানীয় শ্রমিকরা।
মানববন্ধন শেষে সড়কে বসে অবরোধ করে সমাবেশ করেন তারা। এ সময় দুই পাড়ে কয়েক শত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
উল্লেখ্য, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের দূরত্ব কমিয়ে আনতে তিস্তা নদীর ওপর শেখ হাসিনা সেতু (দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু) নির্মাণ করা হয়। ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল সেতুটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য, ফুটপাতসহ ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুতে রয়েছে ১৬টি পিলার, ১৭টি স্প্যান, ৮৫টি গার্ডার। একই বরাদ্দে সেতুটি রক্ষার জন্য উভয় পাশে ১ হাজার ৩০০ মিটার নদী শাসন করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির উদ্বোধন করেন।
Leave a Reply