বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:২৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রংপুরে গাছের ডাল পড়ে মারা গেলেন ১০ বছরের কন্যাসহ শিক্ষিকা, স্বামী আহত র‌্যাব-১৩ মাদক বিরোধী অভিযানঃ ৮১ কেজি গাজা ও ১১৪৫ বোতল ফেন্সিডিল জব্দ, গ্রেফতার ৪ অবৈধভাবে স্যালাইন মজুদ: রংপুরের অবসর ও রিফাত মেডিসিন কর্নারকে জরিমানা সরকারকে সরাতে তারাতারি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করা হবে: আলাল   সাময়িক বরখাস্ত এডিসি হারুন রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরির দায়ে দুই কর্মচারীর ২ বছর করে কারাদন্ড পীরগঞ্জে ৩২ হাজার কেজি সরকারি চাল জব্দঃ ৩ কালোবাজারির নামে মামলা যানজট নিরসনে রংপুর মহানগরীতে চালু হলো ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেম   মিঠাপুকুরে দু’মাসেও গ্রেফতার হয়নি অন্তঃসত্ত্বা সুমি কেরকেটা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আদুরী টপ্য রংপুর মহানগরীর বস্তিগুলোর ৬৭ ভাগ শিশু স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে
আবারো প্রকাশ্যে ঢাবি ছাত্রদলের বিভক্তি

আবারো প্রকাশ্যে ঢাবি ছাত্রদলের বিভক্তি

•হাসান আলী

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। দীর্ঘদিন হল-ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থানের ফলে ক্যাম্পাসে প্রভাব হারিয়েছে সংগঠনটি। হামলা, মামলা ও দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস ছাড়া হয়ে থাকার ফলে তাদের কর্মীর সংখ্যা কমতে কমতে এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। পাশাপাশি কমিটি কেন্দ্রিক গ্রুপিং রাজনীতির শিকার হয়ে বারবার বিভক্ত হয়েছে ছাত্রদলের এই শাখা। সম্প্রতি এই বিভক্তি আবারো প্রকাশ্যে এসেছে। গত কয়েকদিন আগে ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় ছাত্রদল নেতা নয়নকে পুলিশ কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে আলাদা কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে এটি প্রকাশ্যে আসে।

এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এলাকায় ঢাবি শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে এবং বিকালে বাংলা একাডেমি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি ইজাজুল কবির রুয়েল ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল ইসলাম জিসানের নেতৃত্বে পৃথক দুটি মিছিল হয়। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

খোজঁ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় কর্মী বের হবার তুলনায় নতুন কর্মী আসার হার সামান্য। সদ্য গঠিত পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক নেতাকর্মী স্থান পেয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীসংখ্যা ক্রমশই কমে যাচ্ছে। তবে যারা আছে তারাও বর্তমান কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ধীরে ধীরে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে।

আলাদা কর্মসূচী করা নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বর্তমান কমিটির ডাকা কর্মসূচি গুলোয় ১৫-২০ জনের বেশি লোকজন হয় না। অথচ কাগজে কলমে কমিটিতেই আছে ৭২ জন। তাদের (সোহেল-আরিফ) নেতৃত্বের প্রতি অধিকাংশেরই কোন আস্থা নেই। যদি থাকত তাহলে তাদের কর্মসূচিগুলোতে এত কম পরিমাণ লোকজন হতো না। তারা কমিটিতে পদপ্রাপ্ত সবাইকেও কখনো এক ব্যনারে আনতে পারেনি। কর্মসূচীতে প্রোটোকল ভেঙ্গে মিছিলের সামনে যাওয়া, ব্যনার ধরা নিয়ে তর্ক করার মতো ছোট বিষয়ও সামাল দিতে পারে না তারা। সভাপতি ও সম্পাদকের নিজস্ব কোন কর্মী নেই যার ফলে তারা অন্যগ্রুপের কর্মীদের ওপর প্রভাব খাটাতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় নেতারাও। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজস্ব লোকদের দিয়ে কমিটি হাতে রেখেছে। সমন্বয়হীনতার একটা নজির সৃষ্টি করে সংগঠনের জন্যে কাজ করা ছেলেদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয় দের পদায়ন করেছে। আরো নানান কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীরা হতাশা ও অনেকটা বাধ্য হয়েই এইসব কাজ করছে।

এ ব্যপারে কেন্দ্রীয় কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, শিক্ষা, ঐক্য ও প্রগতির ছাত্রদল এখন কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের মাইম্যান তৈরী করছে, যা দুঃসময়ের রাজনীতিতে কখনোই কাম্য নয়। ঢাবি ছাত্রদলের সর্বোচ্চ পদপ্রত্যাশি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে বঞ্চিত করে কেন্দ্রীয় সংসদে দুই ব্যাচ জুনিয়রের পেছনে সম্পাদক রাখা হয়েছে। একই ঘটনা ঢাবির ক্ষেত্রেও। ত্যাগী, নির্যাতিত ও দুঃসময়ে রাজপথে লড়াই করা সাহসী ছাত্রনেতারা অবমূল্যায়িত হলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই সভাপতি ও সম্পাদকের নির্দেশনা না মানার কারণে কয়েকজন নেতাকে সতর্ক করে আসছিল কেন্দ্র। এর অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি ইজাজুল কবির রুয়েল ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল ইসলাম জিসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়। তারা এ বিষয়ে কারণ দেখাতে গেলে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের মুখের ওপর ‘যোগ্যতা দেখে নয় বরং নিজস্ব লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে’ বলেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ছাত্রদলে যারা আছে তারা সবাই দীর্ঘদিন বিরোধী দলে থেকে রাজনীতি করছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের সবারই চেষ্টা থাকে নেতৃত্বে আসার। সাধারণত কমিটি হলে মুল পদে থাকে দুই জন। কিন্তু বাকিরা এই শীর্ষ দুই পদ না পাওয়ায় একটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। যারা আলাদা কর্মসূচী পালন করছে, আমরা তাদের সাথে কথা বলছি। আশা করি খুব দ্রুতই এই বিষয়টা মিটিয়ে আমরা একসাথে কাজ করতে পারব।

এ ব্যপারে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, সংগঠন পরিচালিত হয় নিয়ম ও গঠনতন্ত্র মেনে। সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হতে শুরু করে সর্বশেষ কর্মীকেও সেই নিয়ম মেনে চলতে হয়। কেউ যদি সংগঠনের নিয়ম ও শৃঙ্খলা না মানে, তবে অবশ্যই সংগঠন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য। আমরা পৃথক কর্মসূচীর বিষয়টি নোটিশ করেছি, কারা করেছে, কেন করেছে? তাদের কারা শৃঙ্খলা ভঙ্গে উৎসাহিত করেছে, সববিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যে দুজন মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছে, তা ইতোমধ্যে সংগঠন থেকে শোকজ করা আছে।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সংসদ সবাই কে নিয়ে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। এমন পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। এই পরিস্থিতিতে যারা সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংসদ কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। বর্তমান কমিটির উদারতাকে দূর্বলতা মনে করলে অবশ্যই কঠোর নিয়ম মানাতে বাধ্য করা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com