মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
পীরগাছায় শিশু ধর্ষণকারী বিনোদ চন্দ্রের ফাঁসির দবিতে বিক্ষোভ, কুশ পুত্তলিকায় লাথি ও থুথু নিক্ষেপ সোনা মিয়া হত্যাকান্ড: কাউনিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক কারাগারে কালীগঞ্জে ফেনসিডিল, এসকাপ সিরাপসহ আটক ১ দীর্ঘ ৪০ বছর পর খুলে দেওয়া হয়েছে রংপুর হাসপাতালের দক্ষিণ দিকের গেট রংপুরের বদরগঞ্জে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পালিত হল জিয়াউর রহমানের ৪২ তম শাহাদাৎবার্ষীকি কালীগঞ্জে মাদক বিরোধী প্রচারণামূলক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত বাংলার বুকে এক টুকরো লুসাই গ্রাম, প্রবেশ ফি ৩০ টাকা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের কারণে নয়,নাম ও রোল নম্বর ভুলের কারণে পরীক্ষা ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। ভাড়া নিয়ে বিতর্কে রোকেয়া ভার্সিটির শিক্ষার্থীকে মারধোর, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ বদরগঞ্জে নদীতে ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু

আজ ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস

স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট।।ঠাকুরগাঁও।।বাতায়ন২৪ডটকম।।

আজ ৩ ডিসেম্বর । একাত্তর সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিল ঠাকুরগাঁও । এই অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর দুর্বার প্রতিরোধে নভেম্বরের শেষ দিক থেকেই পিছু হটতে থাকা পাকিস্তানি সৈন্যদের  চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে আজকের এই দিনে ।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের পর সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁয়েও পাকিস্তানি সৈন্যরা আক্রমণ করে । গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠনে তারা মেতে উঠে । একই সঙ্গে চলতে থাকে অমানুষিক অগ্নিসংযোগ । এরপর ১৫ এপ্রিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাক বাহিনীর দখলে চলে যায় ঠাকুরগাঁও ।

এরই মধ্যে সংগঠিত হতে থাকে ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিকামী মানুষ । তারা পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গড়ে তুলে দুর্বার প্রতিরোধ । ঠাকুরগাঁও তখন ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত । কমান্ডার ছিলেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার এম. খাদেমুল বাশার । এ সেক্টরে প্রায় ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিল ।

২৯ নভেম্বর এই মহকুমার পঞ্চগড় থানা প্রথম শত্রুমুক্ত হয় । পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর পাক বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায় । এরপর তারা শক্তি বৃদ্ধি করে সদলবলে প্রবেশ করে ঠাকুরগাঁয়ে ।

২ ডিসেম্বর রাতে ঠাকুরগাঁয়ে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয় । মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনপণ লড়াইয়ে সে রাতেই শত্রুবাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটে ২৫ মাইল নামক স্থানে অবস্থান নেয় । ৩ ডিসেম্বর ভোররাতে ঠাকুরগাঁও শহর শত্রুমুক্ত হয় ।

ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মান্নান বলেন, ঠাকুরগাঁও তখন ছিল মহকুমা । বর্তমান ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার ১০টি থানা ছিল এই মহকুমার অন্তর্গত ।  ৩ ডিসেম্বর সকাল থেকেই আনন্দ মিছিল ঠাকুরগাঁও শহরে মানুষ জড়ো হতে থাকে । জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এ অঞ্চলের জনপদ । হাজার হাজার মানুষ উদ্বেলিত কণ্ঠে ‘জয়বাংলা’ বলতে বলতে মুক্ত শহরের রাস্তায় বের হয়ে আসে । এসময় অনেকের হাতে ছিল দেশের পতাকা ।

জেলার শহর থেকে পল্লী অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত গণকবর আর বধ্যভূমি ।

তবে অধিকাংশ গণকবর আর বধ্যভূমিগুলোর এখন বেহাল অবস্থায় রয়েছে । অযত্ন-অবহেলার মধ্যে পড়ে থাকা গণকবরগুলো দেখার কেউ নেই । অধিকাংশ গণকবর আর বধ্যভূমি এখন গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে ।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ জানান, জেলাড় শুকানপুর ইউনিয়নের বধ্যভূমিটিতে ১৯৭১ সালে ২৩ এপ্রিল দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার লোককে পাকিস্তানি সৈন্যরা হত্যা করে । বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি ।

মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শী রাজাগাঁও ইউনিয়নের বিমলা রাণী বলেন, ‘পাকিস্থানি বাহিনী আগে খরিলুপের বাড়িত আইছিল । খরিলুপের বাড়ি থেকে আসিল হামার বাড়ি । হামরা সবাই দৌড়া দৌড়ি করে পালানো । কিন্তু হামাক সবাকে ধরে নিয়ে আসিল হামার বস্তির তামাক লোকলাকে ধরে নিয়ে আসিছিল । সবাকে লাইন করে মারিল ৩১ জন ছিল । হামাক লাইক করে দাড়ায় থুইল কাহার নাক, নাখ, কাহার লাগের গোস্তগেলা ছিড়ায় নিছে । ওই সময় মুই গর্ভবতী ছিনু মিলিটারির বন্দুকটা দিয়ে মোর পেটটাত গুতা দিছে আর মুই কিছু কহিবা পারু না ।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুব রহমান জানান, জেলার বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে । এছাড়া আমরা ঠাকুরগাঁওবাসী ৩ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত যথাযথ মর্যাদায় পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে ।

বাতায়ন২৪ডটকম/আশা

 

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2022 batayon24
Design & Developed BY ThemesBazar.Com